স্ক্রিন প্রিন্টের কাজ করে স্বাবলম্বী আব্দুল আলীম
মো. মনিরুজ্জামান ফারুক, ভাঙ্গুড়া (পাবনা) থেকে
বতর্মান আধুনিক যুগে দেশে স্ক্রিন প্রিন্টের কাজ ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। স্বল্প পুঁজি খাটিয়ে স্ক্রিন প্রিন্টের কাজ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেকেই। সরকারিভাবেও একাজের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার ব্যবস্থা রয়েছে। অল্প দিনে স্ক্রিন প্রিন্টের কাজ শিখে ব্যবসা আরম্ভ করা যায়। একাজে কম পুঁজিতে আয় বেশি। এর জন্য দরকার শুধু সৃজনশীলতা। বর্তমানে টি-শার্ট, গেঞ্জি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, ব্যানার, ফেস্টুন, মগ, জগ, গ্লাস, প্লেট, খেলনা, পেপার ওয়েট, মেডেল প্রভৃতি জিনিসে স্ক্রিন প্রিন্ট করা হয়।
সামান্য পুঁজি খাটিয়ে শুধু স্ক্রিন প্রিন্টের কাজ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন এমন একজন ব্যক্তির সাথে কথা হয় এ প্রতিনিধির। তিনি জানান, তার সাফল্যের কথা। নাম তার আব্দুল আলীম আকন্দ। বয়স ৪৫ বছর। দীর্ঘ ২৭ বছর যাবত তিনি এ পেশায় নিয়োজিত। পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার আদাবাড়িয়া গ্রামের মৃত আদম আলী আকন্দের ছেলে তিনি। ৭ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট।
আব্দুল আলীম জানান, স্থানীয় কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজে বিএ ভর্তি হন। সংসারের অস্বচ্ছলতার কারণে ছাত্র অবস্থায় সেখানে তার এক বন্ধুর স্ক্রিন প্রিন্টের কারখানায় কাজ নেন। কিছুদিন পর পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেলে বিএ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। ভেঙ্গে যায় তার উচ্চ শিক্ষার লালিত স্বপ্ন। নিরুপায় হয়ে চাকুরী নেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে। সেখানে ভালো না লাগায় ইস্তোফা দেন চাকুরি থেকে। অবশেষে সামান্য পুঁজি নিয়ে শুরু করেন স্ক্রিন প্রিন্টের কাজ।
বর্তমানে তিনি ভাঙ্গুড়া পৌর শহরের শরৎনগর বাজার এলাকায় ছোট্ট একটা ঘর ভাড়া নিয়ে স্ক্রিন প্রিন্টের কাজ করছেন। এলাকা ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা শহর থেকে কাজের অর্ডার পান তিনি। তার কারখানায় টিস্যু ব্যাগের কাজ হয় বেশি। তাছাড়া টি-শার্ট, গেঞ্জি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, ব্যানার, ফেস্টুন, মগসহ স্ক্রিন প্রিন্টের যাবতীয় কাজ তিনি করে থাকেন। এখান থেকে প্রতিমাসে তার আয় হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। তবে হালখাতার মৌসুমে কাজের ব্যস্ততা বেড়ে যায় দ্বিগুণ। একা কুলাতে না পেরে কর্মচারী নিতে হয় এসময়। এ মৌসুমে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় হয় তার।
তিনি জানান, এ কাজ করে তিনি পৌর শহরের মন্ডলমোড়ে ৪ শতক জায়গা কিনে টিনশেড বাড়ি করেছেন। এটিই তার উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন। এর ওপরই চলছে মা, স্ত্রী ও ১ ছেলেসহ ৪ সদস্যের সংসার। আব্দুল আলীম বারসিক নিউজকে বলেন, ‘পড়ারলখা শিখে যে সব বেকার যুবক চাকুরীর জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন সহজেই তারা এ কাজ শিখে কম পুঁজি খাটিয়ে বেকারত্ব ঘুচাতে পারেন।’