যোগাযোগ ও উন্নয়ন

সিলভানুস লামিন

যোগাযোগ কি?
আমরা সবসময়ই যোগাযোগ করি। যোগাযোগ করি নিজের সাথে ও অন্যদের সাথে। আমাদের যোগাযোগের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে আমাদের প্রয়োজনীয় বার্তা প্রাপকের কাছে পৌছানো! আমরা যোগাযোগ করি তথ্য দেওয়ার জন্য, তথ্য পাওয়ার জন্য, নতুন কিছু জানার জন্য, জানানোর জন্য, প্রভাবিত করার জন্য, আমাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য। আমরা যোগাযোগ করি আনন্দ পাওয়ার জন্য, ভাগাভাগি করার জন্য এবং দুঃখ ভুলে যাওয়ার জন্য। আমরা যোগাযোগ করি পরস্পরের সাথে আমাদের চিন্তা, চেতনা, ভাবনা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা সহভাগিতার জন্য এবং তাদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান লাভ করার জন্য। আমরা যোগাযোগ করি সফল হওয়ার জন্য, ব্যর্থতাকে অতিক্রম করার জন্য। আমরা যোগাযোগ করি ভালোবাসা, সহমর্মীতা, সহনশীলতা পাওয়ার জন্য। আমরা যোগাযোগ করি মানুষকে আনন্দ দেওয়ার জন্য, তাদের দুঃখ প্রশমিত করার জন্য। আমরা যোগাযোগ করি শিক্ষা লাভের জন্য, বেঁচে থাকার জন্য। প্রকৃতপক্ষে, আমরা প্রতিদিনই নিজের ও অন্যের সাথে অসংখ্যবার যোগাযোগ করি। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘মানুষ যোগাযোগ না করে থাকতে পারে না!’ শুধু কি মানুষ? পৃথিবীর প্রতিটি সৃষ্টিরই তাদের নিজস্ব কায়দা ও পদ্ধতিতে পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করে। মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদের মধ্যকার এই যোগাযোগ কিন্তু ভিন্ন। মানুষ যে পদ্ধতিতে পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করে অন্য প্রাণী বা উদ্ভিদ হয়তো সেই একই পদ্ধতিতে যোগাযোগ করে না। তাদের যোগাযোগের ধরন আলাদা। তবে সব যোগাযোগেরই একটি মৌলিক উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য থাকে এবং সেটি হলো প্রাপকের কাছে বার্তা পৌছানো! এই যোগাযোগের বার্তার সারকথাই হলো নিজের, দেশের বা সকলের সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন সাধন করা কিংবা এ উন্নয়ন সাধনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো। পৃথিবীতে মানুষসহ কোন সৃষ্টি বা প্রাণই নিজেকে অনিষ্ট করার জন্য অন্যের সাথে যোগাযোগ করে না; যোগাযোগ করে নিজের বা নিজেদের উন্নয়নকে তরান্বিত করার জন্য। তাই যোগাযোগ এবং উন্নয়নের মধ্যে একটি অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে। যোগাযোগের কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে উন্নয়নবিদগণ উন্নয়নের উপকারভোগী বা জনগোষ্ঠীর সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করেন এবং প্রয়োজনীয় বার্তা পৌছান। অন্যদিকে উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে যোগাযোগের কৌশল এবং যোগাযোগের নিত্যনতুন প্রযুক্তি সঠিক ও বাস্তবভিত্তিক প্রয়োগ সম্ভব হয় এবং উন্নয়ন ও যোগাযোগের উদ্দেশ্য অর্জিত হয়। তবে বলে রাখা ভালো, এই লেখায় যোগাযোগ ও উন্নয়নের তাত্ত্বিক কোন আলোচনা নয়; বরং লেখকের নিত্যদিনকার অভিজ্ঞতায় যোগাযোগ ও উন্নয়নের মধ্যকার সম্পর্ক বিশ্লেষণই এ লেখার মূল প্রতিপাদ্য। যদিও যোগাযোগ সম্পর্কে একটি সম্যক ধারণা দেওয়ার জন্য যোগাযোগ শাস্ত্রের কিছু বিষয় এ লেখায় অর্ন্তুভূক্ত করা আবশ্যক হয়ে পড়েছে।

উন্নয়ন কি?
উন্নয়ন নিয়ে নানাজনের নানা মত, নানান যুক্তি, নানান তত্ত্ব, নানান মডেল! তবে আমরা ‘উন্নয়ন’ বলতে মানুষের জীবনপ্রবাহে ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়নকেই বুঝে থাকি। আমরা যে উন্নয়নের কথা বলেছি সেই উন্নয়ন কর্মসূচির নেতৃত্বে থাকে সাধারণ মানুষ এবং যে এলাকায় এই উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয় সেই এলাকার মানুষের কল্যাণের জন্যই পরিচালিত হয়। সারাবিশ্বে আজ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন উদ্যোগ পরিচালিত হচ্ছে। এই উন্নয়ন উদ্যোগগুলো বিভিন্ন মডেলে, বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় এবং বিভিন্ন কৌশলে বাস্তবায়িত হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো ‘উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়ার নীতি’র আলোকে পরিচালিত হচ্ছে। উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়ার কারণে তৃণমূল মানুষের আশা-আকাঙ্খা, চাওয়া, পরামর্শ বা মতামত এসব উন্নয়ন উদ্যোগে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রতিফলিত হয় না; যদিওবা এই উদ্যোগগুলোর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যই হচ্ছে সামগ্রিক উন্নয়ন সাধন। অন্যদিকে এসব উন্নয়ন উদ্যোগে ‘উন্নয়ন’ শব্দটিকে অনেকসময় ‘সঙ্কোচিত’ করে ফেলা হয় শুধুমাত্র আর্থ-সামাজিক উন্নতির দিকে জোর দেওয়ার কারণে। প্রকৃতপক্ষে, ‘উন্নয়ন’ বলতে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং নৈতিক উন্নয়ন তো বটেই পাশাপাশি এই প্রক্রিয়ায় পরিবেশ উন্নয়নও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা যে উন্নয়নের কথা বলছি, সেই উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করা হয়, তাদের মতামত, পরামর্শ ও চাহিদাকে গুরুত্ব দেওয়া দেওয়া হয়। আমরা যে উন্নয়নের কথা বলছি, সেই উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় যাচাই করা হয় যে, যে কর্মসূচি নেওয়া হবে সেগুলো আদতেও ওই এলাকার মানুষের জন্য প্রয়োজন কি না, এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে মানুষের মতামত আছে কি না কিংবা এ ধরনের কর্মসূচি অন্য আরেকটি উন্নয়ন সংগঠন বাস্তবায়ন করেছে কি না! মোট কথা, আমরা সেই উন্নয়নের কথা বলছি, যে উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নৈতিক বা আত্মিক এবং তাদের পরিবেশগত উন্নয়ন সাধন হয় এবং যে উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় পরিচালনা ও নেতৃত্ব দেন ওই এলাকার মানুষ, যাদের জন্য এই উন্নয়ন কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়।

যোগাযোগের বিভিন্ন ধরন
আমরা জানি, যোগাযোগের বিভিন্ন প্রকার রয়েছে। এই প্রকারগুলোর মধ্যে আর্ন্তব্যক্তিক (Intrapersonal communication), আন্তঃব্যক্তিক (Interpersonal communication), এবং গণযোগাযোগই (Mass communication)  অন্যতম। এছাড়াও আমরা যোগাযোগকে বাচনিক ও অবাচনিক হিসেবে শ্রেণীবিন্যাস করতে পারি। আর্ন্তব্যক্তিক যোগাযোগের বিষয়টি হচ্ছে নিজের সাথে কথা বলা এবং চিন্তা করার ক্ষমতাকে নির্দেশ করে। আমরা লক্ষ্য করি, কোনকিছু করার আগে আমরা নিজেদের প্রস্তুত করি, প্রস্তুতি নিই, চিন্তা করি। আমরা কি পরবো, কি খাব, কোথায় যাব ইত্যাদি বিষয়গুলো আগ থেকেই চিন্তা করি যার প্রতিফলন ঘটে আমাদের কাজে। বলা হয়, মানুষ যতবেশি নিজের সাথে অর্থপূর্ণভাবে যোগাযোগ করতে সক্ষম হবে ততবেশি সে সফল হবে। বস্তুত, নিজের সাথে যোগাযোগ না করে আমরা থাকতে পারি না! অন্যদিকে সংক্ষেপে যদি আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগকে সংজ্ঞায়িত করি তাহলে আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ বলতে এক বা একাধিক ব্যক্তির সাথে তথ্য, জ্ঞান, ধারণাসহ বিভিন্ন বিষয় আদান প্রদান করাকে বুঝায়। আমাদের মধ্যকার যোগাযোগে বা আর্ন্তব্যক্তিক যোগাযোগে আমরা যত বেশি পারদর্শী ও সক্ষম হবো ততবেশি সফল হবো আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগে। আমরা প্রতিদিনই আমাদের চলার পথে বিভিন্ন মানুষের সাথে যোাগাযোগ করে থাকি। সেই যোগাযোগটা যেমন একজন ব্যক্তি, একাধিক ব্যক্তি, একটি দল বা সংগঠনের সাথেও হতে পারে। অন্যদিকে আমাদের বিষয়টি অন্যের সাথে সহভাগিতা বা অন্যকে প্রভাবিত করার জন্য আমরা যখন গণমাধ্যম (Mass Media) ব্যবহার করে যোগাযোগ করি সেটিই গণযোগাযোগ নামে পরিচিত। আবার যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমরা অনেক সময় শারীরিক ভাষা, আকার, ইঙ্গিত, চোখ ব্যবহার করি। এটিকে অবাচনিক যোগাযোগ বলা হয় এবং ভাষা ব্যবহার করে যে যোগাযোগ করি সেটিকে বাচনিক যোগাযোগ বলে। মূলত যোগাযোগের সময় আমরা বাচনিক ও অবাচনিকি উভয় ভাবেই যোগাযোগ করে থাকি। যোগাযোগের পরিধি ব্যাপক। সঙ্গত কারণেই উপরে উল্লেখিত যোগাযোগের বিভিন্ন ধরন ছাড়াও মানবীয় যোগাযোগ (Human communication) হিসেবে দলীয় যোগাযোগ (Group dynamics), সাংগঠনিক যোগাযোগ (Organizational communication) এবং আন্তঃসাংস্কৃতিক যোগাযোগ (Cross cultural communication) রয়েছে, যা মানুষের যোগাযোগ কৌশল ও প্রক্রিয়াকে সহজতর করে তুলেছে। অন্যদিকে যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান উন্নতির ফলে যোগাযোগের আরও অনেকগুলো ধরন ও প্রকার বর্তমানে বিদ্যমান রয়েছে।

যোগাযোগ ও উন্নয়ন
যোগাযোগ মানুষের কণ্ঠস্বরকে কাঙ্খিত লক্ষ্যের কাছে পৌছে দেয়, উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় তাদের অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণকে উৎসাহিত ও সহায়তা করে এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন সংঘটনের হারকে দ্রুততর করে। যোগাযোগ মানুষের জীবনে বৈচিত্র্যময় ও বহুমাত্রিক কর্ম সম্পাদনে সহায়তা করে। কোনকিছু প্রতিষ্ঠা বা গড়ে তুলতে চাইলে যোগাযোগ সক্রিয় ভূমিকা পালন করে; কোন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে সেখানেও যোগাযোগ সহায়কের ভূমিকা পালন করে। কোন নিদির্ষ্ট জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়িত করতে হলে যোগাযোগ একটি অত্যন্ত অত্যাবশ্যকীয় হাতিয়ার হিসেবে হাজির হয়। অন্যদিকে কোনকিছু ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় করতে হলে যোগাযোগই সেই ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়কে সুন্দর কাঠামো দেয়। সমাজে ইতিবাচক ও স্থায়িত্বশীল পরিবর্তন আনার জন্য মানুষের পরস্পরের মধ্যে জ্ঞান ও দক্ষতা সহভাগিতা, পারস্পারিক বিশ্বাস, নির্ভরশীলতা সুদৃঢ়করণ, নীতিমালা তৈরি ও প্রয়োগ, অধিপরামর্শ, সেমিনার, সংলাপ ও বিতর্কসহ নানান কর্মসূচি বাস্তবায়নে যোগাযোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বস্তুত মানুষ যোগাযোগ না করে থাকতে পারে না। এটি চিরন্তন সত্য। নিজের সাথে তাকে প্রতিদিন যোগাযোগ করতে হয়। আবার সমাজে বাস করার জন্য অন্যদের সাথেও যোগাযোগ করতে হয়। তার (মানুষ) কোন দাবি ও দাওয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরার জন্যও তাকে যোগাযোগ করতে হয়। অন্যদিকে প্রতিটি উন্নয়ন সংগঠনের প্রাথমিক কাজই হচ্ছে লক্ষিত জনগোষ্ঠীর সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন (Rapport building) করা। এই সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রাথমিক ও মৌলিক কাজই হচ্ছে জনগোষ্ঠীর সাথে যোগাযোগ করা। কোন জনগোষ্ঠীকে জানা, তাদের সমস্যা বোঝা এবং সম্ভাবনাগুলো উন্মোচন করার জন্য তাদের সাথে কথা বলতে হয়, মিশতে হয়, তাদের সংস্কৃতি জানতে হয়। যোগাযোগ না করে সেগুলো জানা কোনভাবেই সম্ভব নয়। আবার কোন জনগোষ্ঠীর সাথে যোগাযোগ করার জন্য উন্নয়ন সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধি নিজেদের তৈরি করেন, কোন বার্তা জনগোষ্ঠীকে দেবেন সে সম্পর্কে তারা প্রস্তুতি নেন এবং বিভিন্ন ধরনের চিন্তা ও ভাবনা করেন। এভাবেই অজান্তে তারা আর্ন্তব্যক্তিক যোগাযোগে জড়িয়ে পড়েন। অন্যদিকে ওই জনগোষ্ঠীদের সাথে বসে কথা বলার জন্য, কিংবা কোন বার্তা দেওয়ার জন্য স্বশরীরে গিয়ে কথা বলতে হয়, যা আন্তঃবক্তিক যোগাযোগ নামেই পরিচিত। এছাড়া কথা বলার সময় নজর দিতে হয় নিজেদের ও জনগোষ্ঠীদের শারীরিক ভাষার দিকেও (অবাচনিক যোগাযোগ)। কারণ যোগাযোগকারী শারীরিক ভাষা যদি ইতিবাচক না হয় বার্তা গ্রহীতার পক্ষ থেকে তাদের বার্তা গ্রহণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। অবশ্য যে বার্তাটি যোগাযোগকারী গ্রহীতার কাছে দিতে চান সেই বার্তাকে অর্থপূর্ণ হতে হয়; অন্যথায় এই বার্তার অর্থ উদ্ধার করতে না পেরে গ্রহীতারা সেটা গ্রহণ করতে পারবেন না।

আবার ধরুন কোন জনগোষ্ঠীর একটি সমস্যা অনেক প্রকট। যেমন: বাল্য বিয়ে। বাল্য বিয়ের হার কমানোর জন্য লক্ষীত জনগোষ্ঠীকে সচেতন করা এবং বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে সেমিনার, কর্মশালা, প্রশিক্ষণসহ নানান কর্মসূচি আয়োজনই শুধু যথেষ্ট হবে না! বরং জনমত গড়ে তোলার জন্য এবং এ সমস্যা সমাধানে সরকারসহ অন্যান্য সামাজিক উদ্যোগক্তাকে (Social actors) প্রভাবিত করার জন্য বাল্য বিয়ের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে সংবাদপত্র কিংবা টিভি চ্যানেলে সংবাদ প্রকাশ, ভুক্তভোগীদের সমস্যা নিয়ে ডকুমেন্টরি তৈরি ও প্রর্দশন, পোস্টার, লিফলেট প্রকাশ এবং ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রচার চালানো প্রয়োজন। এতে করে এই সমস্যার প্রকটতা, গভীরতা এবং সামাজিক প্রভাব সম্পর্কে সবাই অবগত হবে। এক্ষেত্রে উন্নয়ন সংগঠনগুলো গণযোগাযোগের আশ্রয় নেন। বস্তুত, শুধুমাত্র উন্নয়নের ক্ষেত্রেই নয়; জীবনের প্রতিটি পদেই ‘যোগাযোগ’ একটি অতি প্রয়োজনীয় হাতিয়ার হিসেবে পরিগণিত হয়েছে মানুষের জীবনে।

উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ একটি বড় হাতিয়ার। তবে উন্নয়ন সংগঠনগুলো অনেকসময় যোগাযোগকে খুব একটা গুরুত্ব দেন না; যদিও বর্তমানে বেশির ভাগ উন্নয়ন সংগঠন জ্ঞানব্যবস্থাপা ও যোগাযোগকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হিসেবে দেখছে। বাংলাদেশে উন্নয়ন সংগঠনসহ অন্যান্য সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিদিনই নানান রকম যোগাযোগ সম্পর্কিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এসব কর্মসূচি আরও সুন্দর ও অর্থপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা যেতো যদি যোগাযোগ সম্পর্কে সংগঠন ও বা প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কর্মীই সম্যক ধারণা থাকে। যোগযোগ সম্পর্কে মৌলিক ধারণা থাকলে এবং এর কৌশলগুলো জানা থাকলে সঠিক ও অর্থপূর্ণভাবে যোগাযোগ সম্পর্কিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা যাবে। এতে করে সবাই উপকৃত হয়। প্রতিটি যোগাযোগের কর্মসূচিগুলো মূলত চারটি কাজ সম্পাদন করে। এই কাজগুলো হলো: ১) তথ্য দেওয়া (To inform), ২) শিক্ষা দেওয়া (To educate), ৩) বিনোদন দেওয়া (To entertain) এবং ৪) প্রভাবিত করা (To persuade)। উন্নয়নমূলক কাজ বা কর্মসূচি বাস্তবায়নের সময় আমরা কি যোগাযোগের এই চারটি কাজকে বিবেচেনা করে আমাদের বার্তাগুলো তৈরি করি?

happy wheels 2

Comments