নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ইউপি বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দাবি
মানিকগঞ্জ থেকে নজরুল ইসলাম
বর্তমান পৃথিবীতে জ্বালানি ইস্যুটি সবচে’ গুরুত্পূর্ণ ইস্যুর মধ্যে একটি। আদিম মানুষ ও তার সভ্যতার বিকাশে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল আগুণ। যুগে যুগে সেই জ্বালানির নানাবিধ প্রসার ঘটেছে-ঘটেছে বিস্তার। মানুষ কাঠ, কয়লার পাশাপাশি ব্যবহার করছে খনিজ তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নানাবিধ জ্বালানি। এই সকল জ্বালানিই নবায়নযোগ্য নয় তা কোন না কোন একসময় নিঃশেষ হয়ে যাবে কিন্তু সূর্যের আলো অনিঃশেষ। তা কখনোই ফুরাবে না।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য ইউপি বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ চেয়ে, জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধি এবং মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার উদ্দেশ্য নিয়েই সম্প্রতি মানিকগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো একটি জনসংলাপ। নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপর সরকারের অধিক নজর ও বিশেষ বরাদ্দ প্রদানের দাবি নিয়েই মূলত এই জন সংলাপটি আয়োজন করে বারসিক।
এই জনসংলাপে আলোচকরা বলেন, “নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ে আমাদের গবেষণার আগেই জার্মান,সুইডেনসহ বিভিন্ন দেশ তার ব্যবহার শুরু করেছে। আমাদের দেশে যে পরিমাণ বিকল্প জ্বালানির কাঁচামাল রয়েছে পৃথিবীর অনেক দেশেই তা নেই। আমাদের দেশে সূর্য্যরে আলোর আধিক্য বেশি। সেটিকে কাজে লাগাতে হবে।”
সংলাপে জেলা কৃষক সমিতির সভাপতি মজিবর রহমান মাষ্টার বলেন- জীবাশ্ম জ্বালানি শেষ হবে এটি নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। আমি মনে করি সংকট মোকাবেলায নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার যদি বাড়াতে হয় তাহলে আমরা শুধু অফগ্রীড এলাকার বা দরিদ্র মানুষকে ব্যবহার করতে বলব কেন? আগে সচেতন মহল এবং উচ্চ বিত্তশালী মানুষদেরকে সরকার এই জ্বালানি ব্যবহারে বাধ্য করতে হবে।”
বতিলা-মিতরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন বলেন, “ গত বছর যে সোলার হোমগুলো দিয়েছি যা খুবই নগণ্য। তাই এবছর আমি একটি প্রকল্প পাঠিয়োছি কাবিখা’র জন্য সরাসরি টাকা না দিয়ে যাতে সোলার হোম দেয়া হয় এবং বিভিন্ন ভাতার মত যারা জ্বালানি সাশ্রয়ী হবে সেই পরিবারকে বিনামূল্যে সোলার হোম দেয়া যেতে পারে।” তিনি বলেন, “আমরা এমন পরিকল্পনা করেছি যে জ্বালানি সাশ্রয়ী ব্যক্তি ও পরিবারকে সম্মানিত করবো।”
উল্লেখ্য যে, সরকার ইতেমধ্যে এই বিষয়টিতে খুবই জোড় দিয়েছে। এই অঞ্চলের জনপ্রতিনিধি ও মাননীয় মন্ত্রী আলহাজ্ব জাহিদ মালেক স্বপন গত বছর প্রায় ১৫০ দরিদ্র পরিবারের মাঝে সোলার হোম বিতরণ করেছেন। এ বছর বাজেটে জ্বালানি খাতে বেশি বরাদ্দ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বেশি ভর্তুকি রাখা হয়েছে। জনসংলাপে আরও বক্তব্য রাখেন বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায়, বিদ্যুৎ বিভাগের (অব:) কর্মকর্তা রাষ্ট্রপতি পদকপ্রাপ্ত কৃষক মো. শরিফ আলি প্রমূখ।