পহেলা বৈশাখ আমাদের প্রাণের উৎসব
হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে সত্যরঞ্জন সাহা ও মুকতার হোসেন
প্রকৃতির ছায়াঘেরা গ্রামীণ জীবনে পহেলা বৈশাখ আসে নববর্ষের মঙ্গল বার্তা নিয়ে। আমাদের প্রাণে উৎসবে বাঙালিত্বকে জাগানোর জন্য সকলে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠি। বৈশাখকে বরণ করি, সাম্পদায়িকতাকে রুখে দিতে শপথ করি বৈশাখী উৎসবে।
গ্রাম বাংলার তরুণদের সম্মিলিত উদ্যোগে হরিরামপুরের নিমতলা যুব সংঘ পহেলা বৈশাখ ১৪২৫ উদ্যাপন উপলক্ষে মঙ্গল শুভাযাত্রা বের করে। নিমতলী মোড় থেকে মঙ্গল শুভাযাত্রা সকাল ৯.০০ টায় বের হয়। উপজেলা শহরের মেইন রোড হয়ে গ্রামের চিরচেনা রোড যাত্রাপুর হয়ে লেছড়াগঞ্জ বাজার প্রদক্ষিণ করে। শুভাযাত্রায় অংশগ্রহন করেন শিক্ষার্থী, কৃষক-কৃষাণি, তরুণ, যুবক, শিক্ষক, সেচ্ছাসেবক সংগঠন, নিমতলা যুব সংঘ, বন্ধুমঞ্চ, বারসিক, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও প্রশাসনের লোকজন। মঙ্গল শুভাযাত্রায় প্রায় ১০০০ জন অংশগ্রহণ করেন। রাস্তার পাশে নারীরা দাঁড়িয়ে হাতে তালি দিয়ে অংশগ্রহণকারীদের উৎসাহিত করেন।
হরিরামপুরে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে সামাজিক, সাংস্কৃতি ও ধর্মীয় উৎসবে সমন্বয়ের সাথে একে অপরে সহযোগিতা করে আসছেন। এই আত্তিকরণ আরো সুদৃঢ় করতে তরুণদের উদ্যোগে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত হরিরামপুর গড়তে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও বের হলো আনন্দ র্যালি। হরিরামপুর উপজেলার সকল পেশা শ্রেণীর মানুষ ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে শিক্ষার্থী, কৃষক, তরুণ, যুবক, সেচ্ছাসেবক সংগঠন, নিমতলা যুব সংঘ, বন্ধুমঞ্চ, বারসিক, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও প্রশাসন প্রতিনিধি এই র্যালিতে অংশ নেন। বাঙালি সংস্কৃতির ধারক বাহক তরুণ যুবকদের কাঁধে ছিল কৃষকের লাঙ্গল, জোয়াল, মাথাল, কাস্তে, পালকি, নৌকা, জাল, ধুুতি-পানজাবি পড়ে রঙিন সাজে র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।
পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন প্রসঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক টিম মারোফ আহমেদ ও তাহির জামান রাহাদ বলেন, “নববর্ষ আমাদের সকলের। বৈশাখ বরণ করতে তরুণদের সম্মিলিত প্রয়াস। বৈশাখ আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির ধারক বাহক। আমরা এ আয়োজন প্রতিবছরের ন্যায় এবছর করছি। সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত হরিরামপুর গড়তে আমাদের এই আয়োজন।”
শিক্ষার্থী-তরুণগণ বর্ষ বরণকে সামনে রেখে আগের দিন রাত্রে রাস্তায়, দেওয়ালে আল্পনা তৈরি করেন। বৈশাখী মঙ্গল শুভাযাত্রাবের করার জন্য অংশগ্রহনকারীগণ নিজ নিজ সাজে তৈরি হয়। ছাত্র-তরুণগণ বাঁশ দিয়ে তৈরি কৃত কোলা, রং দিয়ে একে ব্যানার হিসাবে ব্যবহার করেন। ঢাক-ডোল, আড় বাঁশি, ক্যাপ, মাথায় ও হাতে ব্যাচ, হাতে মুখে গালে শুভ নব বর্ষ লেখা, পালকিতে বর কনে, জলাদের সাজ, তীর-ধনুকের ব্যবহার ও ঘটক সেজে এবং চোখে, মুখে, শরিলে বিভিন্ন রঙ দিয়ে আঁকে বৈশাখী আলপনা।