পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মেটাচ্ছে আসমা পারভীনের ছাদ বাগান
সাতক্ষীরা থেকে গাজী মাহিদা মিজান
বাড়ির ছাদে শোভা পাচ্ছে থানকুনি, তেলাকচু, পুদিনাসহ নানা অচাষকৃত শাক-লতাপাতা। এছাড়াও রয়েছে লাউ, কুমড়া, কাঁচাঝাল, ডালিম, কচু, বেগুণসহ আরও কয়েক প্রজাতির ভেষজ ও ফলজ গাছ। আর এসব শাক-লতাপাতা শোভা পাচ্ছে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বক্চরা গ্রামের গৃহবধূ আসমা পারভীনের বাসার ছাদে।
আসমা পারভীন পেশায় একজন দলিল লেখক। স্বামী ও দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে তাঁর ছোট সংসার। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অফিসে ব্যস্ত সময় পার করেন। এত কর্মব্যস্ততার মধ্যেও প্রতিদিন কিছুটা সময় পার করেন তার ছাদ বাগানে। সন্ধ্যায় অফিস থেকে ফিরে নিজ হাতে গাছে পানি দেন, গাছের আগাছা পরিষ্কার করেন, নানা রকম নতুন নতুন গাছ রোপণ করেন।
তাঁর বাড়ির ছাদে বিভিন্ন টবে রয়েছে মিষ্টি কুমড়া, টমেটো, কয়েক প্রজাতির কচু, পুদিনা, ডালিম, পুঁইশাক, থানকুনি, কয়েক প্রজাতির কাঁচাঝালসহ নানা রকমের শাকসবজি। এছাড়াও বাড়ির পরিত্যক্ত জায়গায় রয়েছে পেঁপে, আমগাছ, কাঁঠালগাছসহ আরও অনেক ফলজ গাছ। এবছর তার মিষ্টি কুমড়া ও লাউ গাছে প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি কুমড়া ও লাউ হয়েছে। পুঁইশাক গাছে অনেক পুঁইশাকের দানা হয়েছে। শীতকালে নিজের টমেটো গাছ থেকে খেয়েছেন প্রচুর পরিমাণের টমেটো।
তিনি তার ছাদ বাগান থেকে নিজের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি মিষ্টি কুমড়া, লাউ, পুঁইশাকসহ আরও অনেক শাকসবজি বিক্রি করেছেন। এই কাজে তাঁকে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও সাহায্য সহযোগিতা করেন।
নিজ উদ্যোগে এক বছর আগে বাড়ির ছাদে শখের বসে লাগিয়েছিলেন কয়েক রকমের শাকসবজি। শুধুমাত্র নিজের ভালো লাগা ও শখের বসেই গড়ে তুলেছেন এই ছাদ বাগান। ধীরে ধীরে নিজের প্রচেষ্টায় বাড়িয়েছেন গাছের সংখ্যা। এখন তাঁর ছাদ বাগানে নানা রকমের অচাষকৃত শাকসবজিসহ আরও বিভিন্ন প্রজাতের সবজি ও ফলের গাছ রয়েছে। তাঁর এই উদ্যোগে পরামর্শ ও ছাদ বাগানের কিছু উপকরণ সহযোগিতা করছে বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক।
আসমা পারভীন বলেন, “অফিসের দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততা শেষে বাড়ি ফিরে অন্যান্যদের মত গল্প-আড্ডায় না বসে নিজ বাড়ির ছাদে বাগানে পরিচর্যা করি। এর ফলে বাইরে থেকে শাকসবজি কেনা লাগে না। পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারি। এর পাশাপাশি এসব কাজ করার মধ্য দিয়ে সারাদিনের ক্লান্তি ভাবও কেটে যায় এবং মন ও ভালো থাকে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাশয় ও পাকস্থলি ঠান্ডা রাখতে এবং রক্ত পরিষ্কার করতে থানকুনি সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিসের জন্য তেলাকচুর শাক খুব উপকারী। তাই আমি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় নিজে বাগানের এসব সবজি রাখি। এছাড়া এসবের মধ্য দিয়ে আমি কিছুটা অর্থ উপার্জন ও করতে পারি।”