দুর্যোগ মোকাবেলায় চরে পটল চাষ
হরিরামপুর থেকে মুকতার হোসেন:
হরিরামপুর পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে চরে যেতে হয়। প্রতিবছর বন্যার পানিতে প্লাবিত হয় এলাকা। চরে মাটিতে পলি পড়ার কারণে এ মাটি বেশ উর্বর। ফলে চরে যে কোন ফসল উৎপাদন করলে তা ভালো হয়। রাসায়নিক সার কিংবআ অন্যান্য বিষ দিতে হয় না। সেই কারণে চরের শাকসবজিসহ সকল ধরনের উৎপাদিত ফসল বাজারে কদর বেশি ।
চরের এই উর্বর মাটিকে কাজে লাগিয়ে হরিরামপুর হরিহরদিয়া গ্রামে কৃষক আফছার আলী তার বসতবাড়িতে ২০ শতক জমিতে বন্যার হাত থেকে রক্ষার জন্য মাটি ভিটি উচু করে মাচায় পটল চাষ করছেন। তাঁর পটল চাষের উদ্যোগ দেখে লুৎফর রহমান, লোকমান হোসেন, ওয়াজেদ আলী, মোন্নাফ শিকদারসহ আরও ১৫ জন কৃষক তাদের উচু ভিটায় মাচায় পটল চাষ করছেন। বন্যার সময় যখন চারিদিকে পানি তখন তরকারি চাহিদা পূরণে মাচায় পটল চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে তারা মনে করেন।
বর্তমানে বাজারে পটল ৪০ টাকা কেজি দরে পাইকারী বিক্রি হচ্ছে। চরের পটল ঝিটকা, নয়ার হাট, আন্দারমানিক, নতুনহাট বজাার, পাটগ্রামচর বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে আফছার আলী বলেন, ‘আমি ২০ শতক জমিতে পটল চাষ করে এ বছর ৬০ হাজার টাকা ফসল বিক্রি করেছি। আমার কাছ থেকে পটলের পট নিয়ে প্রায় ২৫ জন কৃষক বর্তমানে পটল চাষ করছেন।’ অন্যদিকে বাহির গ্রামের কৃষক শহিদ বিশ^াস বলেন, ‘আমি চরে অভিজ্ঞতা বিনিময় সফরে গিয়ে আফছার আলীর নিকট পটলের পট এনে বাড়িতে চাষ করেছি।’
হরিরামপুর উপজেলা দুর্যোগ প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। প্রতিবছর বন্যার পানিতে এলাকার রাস্তাঘাট, আবাদী জমি, বাড়ির আশেপাশে পানি উঠে । ফলে অনেক সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়। কৃষকরা বন্যার ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার জন্য মাটি দিয়ে উচু করে ভিটি তৈরি শাকসবজি তথা লাউ, চালকুমড়া, ধুন্দল, ঝিংগা, পটল, মরিচ, বেগুন চাষ করছেন।
উল্লেখ্য যে, বারসিক দুর্যোগ মোকাবেলোয় কৃষকদের দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা, অভিজ্ঞতা বিনিময় সফর, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে কৃষকদের সহায়তা করে আসছে।