কৃষি বিভাগের সাথে কৃষকের সংলাপ অনুষ্ঠিত
মানিকগঞ্জ সিংগাইর থেকে সারমিন আক্তার
বারসিক’র উদ্যোগে সম্প্রতি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার সারারিয়া গ্রামে এলাকার কৃষি সমস্যা সমাধানে কৃষক ও কৃষি বিভাগের সাথে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংলাপে উপস্থিত ছিলেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ দুলাল হোসেন এবং বারসিক’র কর্মকর্তা প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী শিমুল কুমার বিশ্বাস ও মাঠ সহায়ক সারমিন আক্তার প্রমুখ।
কৃষিকাজে কৃষকের কি ধরনের সমস্যা হয় এবং উক্ত সমস্যা সমাধানে কৃষক ও কৃষি বিভাগের কি ধরনের ভূমিকা হতে পারে সে বিষয়ে পারস্পারিক বোঝপাড়া বৃদ্ধি করাই ছিলো এ সংলাপের মূল উদ্দেশ্য। এই প্রসঙ্গে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ দুলাল হোসেন বলেন, “আগের কৃষি থেকে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থায় অনেক ধরনের পরিবর্তন এসেছে। বর্তমান সময়ে যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছে সেই তুলনায় খাদ্যে চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। তাই কৃষি কাজে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে অনেকগুণ। তবে আমাদের চিরায়ত কৃষিকে বাদ দিয়ে কোন কিছুকেই আমরা বদলাতে চাই না।” তিনি পারিবারিকভাবে দেশীয় বীজ সংরক্ষণ ও চাষ বৃদ্ধি করে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। তিনি ফসলের জমিতে বেশি জৈব সার ব্যবহার বৃদ্ধি ও সবজি ক্ষেতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার কমিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট ও বালাইনাশক এবং ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহারের পরামর্শ দেন কৃষকদের। তাছাড়া তিনি কৃষকদের আশ^স্ত করেন যে, সরকারি যে কোন ধরনের সেবা বা পরামর্শের জন্য কৃষক যে কোন সময় তাঁর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের কৃষি বিভাগ ভালো মানের বীজ, প্রশিক্ষণ, প্রণোদনা, কৃষি পরামর্শ, প্রদর্শনী প্লটসহ নানা ধরনের সেবা দিয়ে থাকে।”
এসব সেবা পরিসেবা জানার পর অংশগ্রহণকারী মোঃ শাহিনুর রহমান বলেন, ‘আমি মূলত কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। তাই ভালো ফলন পেতে আমাদের কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ দরকার।’ কৃষক আফতাছ মিয়া বলেন, “আমার ১ বিঘা আখ ক্ষেত আছে যেখানে আখের মাথায় থুবরা রোগ আক্রমণ করেছে। আখ ক্ষেতের ফলন ভালো না হলে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবো।” কৃষকদের সমস্যার কথা শুনে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে কিছু ঔষধ লিখে দেন এবং কৃষকদের ফসল সংক্রান্ত সমস্যা জানালে মাঠ পরিদর্শন করে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
কৃষি বিষয়ক আলোচনার পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ের ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ও করনীয় বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। ডেঙ্গু মোকাবেলায় সকলের কাছে লিফলেট প্রদান করেন কৃষি কর্মকর্তা। বারসিক কর্মকর্তা শিমুল বিশ্বাস বলেন, “বারসিক এর কাজ হলো সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর এক ধরনের কর্মসম্পর্ক তৈরি করা। যাতে সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলোর অধিকার প্রতিষ্ঠা পায়। আজ এ কার্যক্রমের মাধ্যমে শারারিয়া গ্রামের কৃষি পরিবারের সাথে সরকারের কৃষি বিভাগের আন্তঃসম্পর্ক তৈরি হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি মঞ্জু বেগম বলেন, “আমাগো এলাকায় এই প্রথম কোন সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে আমরা সরাসরি আলোচনা করতে পারলাম। আশা করছি আমাগো কৃষি সমস্যা আর থাকবো না।”