প্রান্তিক মানুষের খাদ্য নিরাপত্তায় অচাষকৃত উদ্ভিদবৈচিত্র্য
বরেন্দ্র অঞ্চল প্রতিনিধি
‘রাসায়নিক কীটনাশকের মাত্রারিক্ত ও নির্বিচারে কীটনাশকের ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন ঔষধি ও পুষ্টিকর উদ্ভিদ বৈচিত্র্য বিলুপ্তির পথে। জানা অজানা অনেক উপকারী উদ্ভিদ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এসকল উদ্ভিদ বৈচিত্র্য গ্রামীণ অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণেও ভূমিকা রাখে।’ গতকাল রাজশাহী তানোর উপজেলার গোকুল মথুরা গ্রামে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উপলক্ষে প্রাকৃতিক খাদ্য মেলা ও অচাষকৃত উদ্ভিদের রান্না প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীগণ উক্ত কথাগুলো বলেন।
বারসিক ও স্থানীয় নারী সংগঠনের উদ্যোগে উক্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে তানোর উপজেলার নির্বাহী অফিসার নাছরিন বানু বলেন, ‘রাসায়নিক কীটনাশকের ভয়াবহতা সবাইকেই গ্রাস করছে। আমরা সবাই এর জন্য ভুক্তভোগী। কিন্তু এই অচাষকৃত উদ্ভিদগুলো নিরাপদ ও কীটনাশক মুক্ত, যা পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণে সক্ষম।’ তিনি এই অচাষকৃত উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সুরক্ষায় সকলকে উধ্যোগ গ্রহণের আহবান জানান। একই সাথে তিনি নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ নারীর ক্ষমতায়নে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধসহ নিরাপদ খাবারের পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন গোকুল মথুরা গ্রামের সমাজ সেবক আলহাজ্ব মো. আলাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘অচাষকৃত সকল উদ্ভিদই কোন না কোন গুণের অধিকারী যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন পুষ্টি চাহিদা পূরণে সহায়ক। এগুলো আমাদের রক্ষা করা জরুরি। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন গোকুল-মোথুরা কৃষক সংগঠনের সভাপতি জিতেন্দ্র নাথ, বারসিক এর সহযোগী কর্মসূচী কর্মকর্তা অমৃত কুমার সরকার, জিনাতুন নেছা, নারী নেত্রী শ্রীমতি অঞ্জলী রানীসহ এলাকার শাতাধিক তরুণ ও শিক্ষার্থীরা।
শ্রীমতি অঞ্জলী রানী বলেন, ‘এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা অনেক কিছু জানতে ও বুঝতে পারছে। পাশাপাশি আমরা নিজেরা এর গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারছি যা আগে ভেবে দেখিনি।’
অচাষকৃত রান্না প্রতিযোগিতায় নানা রকমের অচাষকৃত বুনো কচু রান্না করে প্রথম হয়েছেন গোকুল মথুরা গ্রামের মেনুকা রানী, তেলাকুচা রান্না করে দ্বিতীয় হয়েছেন মাজেদা বেগম, সুস্বাদু শুনশুনি রান্না করে তৃতীয় হয়েছেন শ্রীমতি পাখি রানি। উক্ত রান্না প্রতিযোগিতায় গ্রামের ৬০ জন নারী অংশগ্রহণ করেন।