বৈশাখ আমাদের উৎসব
হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে মুকতার হোসেন
হরিরামপুর উপজেলা পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন যেতে হয়। চরাঞ্চলে পৌঁছতে চোখে পড়ে পদ্মা নদীতে জেলেদের মাছ ধরার নৌকা নিয়ে ছোটাছটি। চকে রয়েছে বৈচিত্র্যময় ফসল। কৃষকরা ব্যস্ত তাদের কৃষি কাজ নিয়ে। চরাঞ্চলের নারীরা ঘরে বসে নেই, মাঠে ঘাটে গরু ছাগল ভেড়া পালন, গরুর জন্য ঘাস সংগ্রহ করা, চক পাথারে যারা কাজ করছে তাদের জন্য খাবার নিয়ে যাওয়া এ সকল কাজে নিত্যনৈমিত্ত রুটিন দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্ম করেন তারা।
লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নে হরিহরদিয়া স্থানীয় কৃষক সংগঠন ও পাটগ্রাম সেচ্ছা-সেবকটিমের সদস্যরা বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানাতে আয়োজন করে প্রাণ বৈচিত্র্যমেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গ্রামবাসী, স্থানীয় জনগোষ্ঠির বৈশাখি উৎযাপনের উদ্যোগকে আরও প্রাণবন্ত করতে এগিয়ে আসে বেসরকারী উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান বারসিক। সংগঠনটি ব্যানার, রঙ, রঙ্গিন কাগজ, পুরস্কার বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সহযোগিতা করে আয়োজকদের। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন শিশু, কিশোর-কিশোর-কিশোরী, শিক্ষার্থী, কৃষক-কৃষাণী, মৎস্যজীবী, ইউপি সদস্য, ব্যবসায়ী মানুষ।
পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানে চরাঞ্চলের মানুষেরা তাদের উৎপাদিত ফসল ধান, গম, মুসুর কালাই, শরিষা, ধনিয়া সজ, কালোজিরা, মিষ্টিকুমড়া, চাল কুমড়া বীজ লাল শাকের বীজ দিয়ে বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ লেখা তৈরি করেন। এছাড়া তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজের জিনিসপত্র, যেমন কুলা, চালুন, পাচুন, হাতা, ঢালি, টোপারভার, হাত নাংলা, নিড়ানী, কাচি, টুপারি কোদাল, লাঙ্গল জোয়ালসহ অনেক ব্যবহৃত জিনিসপত্র প্রদর্শন করেন এদিনে।
বৈশাখি বরণের গুরুত্ব ও নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচানয় সাবেক ইউপি সদস্য এবং হরিহরদিয়া কৃষক সংগঠনের সভাপতি ন্নানু প্রামাণিক বলেন, ‘বৈশাখ আমদের উৎসব, বৈশাখ আমাদের বাঙালি জাতির সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতিকে আমরা র্চ্চা করব এবং তরুণ প্রজন্মের ভিতরে বাঙািল সংস্কৃতিকে চর্চা, চেতনাকে ধারণ করানোর জন্য তাদের উৎসাহ দিয়ে এগিয়ে নিতে হবে। ভবিষ্যতে তারা যেন এই চরাঞ্চলে আরও শিক্ষা, সংস্কৃতিকে পালন করে।’
কিশোরী শিল্পী আক্তার বলেন, ‘শহরে অঞ্চলে বিভিন্নভাবে দিনটি পালন করা হয়। আমরা আমাদের মত করে সাজিয়েছি। ছোট ছেলে মেয়েদের বৈশাখি নতুন কাপড় কিনে দিয়েছি। এখানে এসে বিভিন্ন ধরনের বীজ দিয়ে লেখা বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ লেখাটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।’
চরাঞ্চলেণ সকাল থেকেই ছিল ছোট ছেলেমেয়েদের নতুন পোশাক পড়ানো, রঙ মেখে, স্থানীয় গাছের লতাপাতা, ফুল, ফল ব্যবহার করে সাজ দেওয়া এবং পাড়া, প্রতিবেশীর বাড়িতে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়।