তাদের দেখানো পথেই আমাদের পথ চলা হোক

শ্যামনগর, সাতক্ষীরা থেকে বিশ্বজিৎ মন্ডল ও বিধান মধু

এলাকাতে একসময়ে কানামাছি, গোল্লাছুট, মারবেল, হাডুডু, হাড়িভাঙ্গা, লুকোচুির, ডাংকলি, মোরক লড়াই, ষাড়ের লড়াই, ঘোড়াছুট, গাদনসহ বিভিন্ন ধরনের গ্রামীণ খেলা দেখা যেত। সময়ের বিবর্তনে আজ সে সব খেলা শুধূ রূপকথার গল্পের মতো। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের অনেকেই এসব খেলার নামও শুনেনি। অথচ এ খেলাগুলো ছিল আমাদের ঐতিহ্য বাহক। এ খেলা ধুলা সম্পর্কে এবং প্রবীণ ও নবীনদের মধ্যে মেল বন্ধন তৈরিতে ভূমিকা রাখবে বলে এখনোই অনেকই মনে করেন। গ্রামীণ ঐসব খেলাধুলা ধরে রাখতে এবং প্রবীণদের প্রতি নবীনদের শ্রদ্ধাশীলতা তৈরিতে শ্যামনগর উপজেলার যাদবপুর বিলে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিমের উদ্যোগে ও বারসিক’র সহায়তায় গাদন খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

20190215_170042
খেলায় যাদবপুর, কালমেঘা, চিংড়াখালী, দেবীপুর, ফুলবাড়ি গ্রামের প্রবীণ ও নবীন দু’টি দলে বিভক্ত হয়ে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠিত এই খেলা উপভোগ করতে এলাকার শতশত মানুষ হাজির হয়। শিশু থেকে শুরু করে নারী, পুরুষসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ ঐতিহ্যবাহী এই গাদন খেলা উপভোগ করেন।

20190215_162605
খেলায় আগত প্রবীণ শিক্ষক আব্দুল আলিম বলেন, ‘এধরনের খেলা হলো গ্রাম বাংলার প্রাণ। এ অঞ্চলের প্রাচীন খেলা হলো এই গাদন খেলা।এই খেলাকে কেন্দ্র করে এক ধরনের আমেজ তৈরি হয়েছে। বর্তমান সময়ের ছেলেমেয়েরা এখন টিভি, মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত তারা এসব খেলার প্রতি আকৃষ্ট নয়। কিন্তু নবীনদের এসব খেলায় আসক্ত করা জরুরি। কারণ পরবর্তী প্রজন্মরা যদি সৎ, সুস্থ এবং ভালো থাকে তাহলেই তো সুন্দর দেশ গড়া সম্ভব।”
অন্য দর্শনাথী প্রবীণ ব্যক্তি রন মন্ডল, লুৎফর রহমান, শাহীন ইসলামরা বলেন, ‘প্রতিনিয়ত এরকম খেলা দেখা মানে স্বপ্ন দেখা। আজকে এ খেলা দেখার মাধ্যমে যেন পুরানো ঐতিহ্য খুজে পেলাম। এরকম যে সব গ্রামীণ খেলা আছে সেগুলো টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের। এ ধরনের খেলার মাধ্যমে নিজেকে বিকশিতসহ সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হবে।”

20190215_162710
অন্যদিকে শিক্ষার্থী লিটন, কামরুল ইসলাম, আব্দুল কাদের ও হাবিবুল্লাহরা বলেন, ‘যে আমরা এ খেলা আযোজন করেছি এগুলোকে টিকিয়ে রাখার জন্য এবং প্রবীণদের বিনোদনসহ তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আমরা জানি যে পুরাতন চাউলে ভাত বাড়ে সেটাকে আমরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। প্রবীণদের কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু নেওয়ার আছে। তাদের দেখানো পথেই আমাদের পথচলা হোক।’

happy wheels 2

Comments