সাম্যতাই উপহার দিতে পারে এক শান্তিময় বহুত্ববাদ সমাজ
মানিকগঞ্জ থেকে কমল চন্দ্র দত্ত
“আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর” পুরাতন বছরের হিংসা-বিদ্বেষ, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে নতুন বছরের সকলের মঙ্গল ও উন্নতি কামনায় মানিকগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণকে সমবেত করে বর্ষবরণ ১৪২৬ উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসন। তারই ধারাবাহিকতায় পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সামাজিক ও গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান বারসিক বৈশাখের অতীত ঐতিহ্যের সঠিক চিত্র তুলে ধরা, সুস্থ ধারার সংস্কৃতি ধারণ, লোকায়ত জ্ঞানকে বেগবান করা ও বহুত্ববাদ সমাজ বিনির্মানের লক্ষ্যে মানিকগঞ্জের পূর্ব দাশড়া, পশ্চিম দাশড়া ও সরুন্ডি কর্ম এলাকার শিশু, কিশোর, যুব ও নারী-পুরুষদের নিয়ে বিভিন্ন বর্ণিল সাজে সজ্জিত হয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানমালার দিনে বিভিন্ন সাজে সজ্জিত হয়ে (কৃষক, জেলে, তাঁতী, কামার, কুমার, মালী, বাউল, সাপুড়ে, মাঝি, বংশীবাদক, আদিম মানুষ, ঝাড়–দার, বাংলার বধূ) বারসিক মানিকগঞ্জ শহর অফিসে এসে সমবেত হন সবাই। এরপর বারসিক মানিকগঞ্জ শহর অফিস থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নগর ভবন প্রাঙ্গনে এসে শেষ হয়। নগর ভবন থেকে সমন্বিত মঙ্গল শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পাশে বিজয় মেলা মাঠে এসে সমবেত হয়।
এভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন থেকে খন্ড খন্ড শোভাযাত্রা এসে বিজয় মেলা মাঠটি এক মিলন মেলায় পরিণত হয়। শোভাযাত্রার শেষে জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বিত মঙ্গল শোভাযাত্রাটি বিভিন্ন আনন্দমুখর বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নেচে গেয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে। মঙ্গল শোভাযাত্রায় বারসিক কর্ম এলাকার শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
মঙ্গল শোভাযাত্রায় সমাজের বিভিন্ন ধর্মের, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী পুরুষের বর্ণিল সাজের উপস্থিতি বৈচিত্র্যের এক অসাধারণ অনুভূতি অনুভূত হয় সবার মাঝে। আর উগ্রতা নয়, ভিন্নতা নয়। সাম্যতাই উপহার দিতে পারে এক শান্তিময় বহুত্ববাদ সমাজ।