কৃষকদের সম্মিলিত শক্তির জয়!
হরিরামপুর মানিকগঞ্জ থেকে মুক্তার হোসেন ও সত্যরঞ্জন সাহা
হরিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে বাহিরচর গ্রাম পাশ দিয়ে বয়ে গেছে পদ্মা নদী। পদ্মার ভাঙা-গড়ার মাধ্যমে বাহিরচর মাঠের সাথে যুক্ত থাকায় বর্ষার সময় বন্যার পানিতে সকল ফসল নষ্ট হয়ে যায়। বাহিরচর একশ’ একর ফসলের মাঠে প্রতিবছর আষাঢ়-শ্রাবণ মাসের বৃষ্টির পানি ও পদ্মার নদীর বন্যার পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। জলাবদ্ধ পানির জন্য বাহিরচর গ্রামের মানুষের রাস্তা দিয়ে যাতায়াতে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে সমস্যা হয়। রাস্তা নিচু হওয়ায় ও কালভার্ট না থাকায় পানি যাওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই। ফলে জলাবদ্ধতার কারণে যাতায়াত থেকে শুরু করে ফসল উৎপাদন পর্যন্ত সমস্যাগ্রস্ত হন এলাকার মানুষ। এলাকাবাসীরা দীর্ঘদিন থেকেই সেখানে একটি কালভার্ট নির্মাণের দাবি করে আসছেন। তাদের মতে, কলাভার্ট নির্মিত হলে সেখানে পানি যাওয়ার ব্যবস্থা তৈরি হবে এবং এতে করে জমিতে ফসল উৎপাদনে সমস্যা হবে না এবং যাতায়াতেও আসবে স্বস্তি! কিন্তু তাদের এই দাবি কেউ কর্ণপাত করেনি।
কোন উপায় না পেয়ে গত বছর (২০১৫) বাহিরচর এলাকাবাসীরা একত্রিত স্থানীয় সরকার প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করেন। এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে যাতে জলাবদ্ধতা নিরসণে উদ্যোগ নেওয়া হয় সেই দাবি জানান। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রামকৃষ্ণপুর ৮নং ওর্য়াডের ইউপি সদস্য সিকিম আলী পরিশ্রুতি দেন যে, আগামী অর্থ বছরে ইউনিয়ন পরিষদের বাজেটে বরাদ্দ রাখা হবে। তিনি এই বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের সভাতে উত্থাপন করেন। অবশেষে ২০১৫/১৬ অর্থ বছরে স্থানীয় সরকারের অধীনে এলজি এসপি-২ প্রকল্পের আওতায় প্রায় এক লাখ ৪৪ হাজার টাকা ব্যয়ে বাহিরচর ইউপি সদস্য সিকিম এর বাড়ি থেকে আলগীচর শেষ মাথা পর্যন্ত এক কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা উঁচুকরণসহ মাইনুদ্দিনের বাাড়ির কাছে একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। কালভার্ট নির্মাণ করায় এলাকায় জলাবদ্ধতা আর নেই এবং কৃষকরাও তাদের জমিতে ফসল উৎপাদন করতে পারছেন। এই প্রসঙ্গে স্থানীয় কৃষক মাইনুদ্দিন বলেন, “কালভার্ট নির্মিত হওয়ায় ১০০ একর জমির চাষাবাদে পানি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত হবে এবং রাস্তাটিতে মাটি ফেলে উঁচু করার কারণে বর্ষাকালে লোকজন যাতায়াতে আর অসুবিধা হবে না।”
এভাবে দেখা যায় সম্মিলিত শক্তিতে যেকোন কাজ যেমন সম্পাদন করা যায় ঠিক তেমনি যেকোন দাবি আদায় করা যায়। সামাজিক সমস্যা সমাধানে এবং একটি প্রগতিশীল সমাজ বির্নিমাণে এই সম্মিলিত শক্তি প্রয়োগ করা উচিত।