গোদাগাড়ীতে অচাষকৃত উদ্ভিদের পাড়া মেলা ও রান্না প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
রাজশাহী থেকে মো. জাহিদ আলী
বারসিক রাজশাহীর উদ্যোগে বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে গোদাগাড়ী গোগ্রাম ইউপির বড়শি পাড়া গ্রামে গতকাল অচাষকৃত উদ্ভিদের পাড়া মেলা ও রান্না প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিযোগিতায় ১০ জন কৃষাণীর অচাষকৃত উদ্ভিদের রান্না প্রতিযোগিতায় অচাষকৃত সবজির স্বাদ গ্রহণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গোদাগাড়ী উপজেলার চেয়ারম্যান ইসহাক।
দিনব্যাপী উৎসবমূখর পরিবেশে অচাষকৃত উদ্ভিদ সংগ্রহ করেন এলাকার কৃষাণী তরুণ ও তরুণীরা। বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত রান্না প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করেন ১০ জন কৃষাণী। বৈচিত্র্যময় অচাষকৃত উদ্ভিদের পসরা সাজিয়ে বসেন এলাকার তরুণ তরুণীরা। রান্না প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীরা ভিন্ন ভিন্ন ১০ ধরণের অচাষকৃত শাকের রান্না করেন। এই সময় গ্রামে নারীদের মধ্যে কৌতুহল লক্ষ্য করা যায়।
রান্না প্রতিযোগীতায় ৩জন বিচারকের প্যানেলের মাধ্যমে ফলাফল তৈরি করা হয়। রান্না প্রতিযোগীতায় কচু শাক রান্না করে প্রথম স্থান অধিকার করেন সাহিদা বেগম, কলমি শাক রান্না করে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন রঙ্গিলা বেগম এবং কাটালইটা শাক রান্না করে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন পাখি খাতুন।
রান্না প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী রোজিনা বেগম জানান, “অচাষকৃত শাক আমরা নিজেরা তুলে রান্না করি। তবে অনেক পরিবারের ছেলেমেয়েরা এই শাকগুলো চিনে না । সার, বিষ ছাড়া এই শাকগুলো পুষ্টিকর এগুলো সকলের খাওয়া উচিত।
অন্যদিকে অচাষকৃত উদ্ভিদের পাড়া মেলায় ৩৭ ধরণের অচাষকৃত শাক ও ঔষধি গাছ সংগ্রহ করে প্রথম স্থান অধিকার করেন বৃষ্টি খাতুন, ৩৫ ধরনের শাক সংগ্রহ করে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন আসমা খাতুন এবং ৩৩ ধরনের শাক সংগ্রহও প্রদর্শন করে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন দুতি খাতুন।
এই প্রসঙ্গে অচাষকৃত পাড়া মেলায় দ্বিতীয় স্থান অধিকারী আসমা খাতুন বলেন, ‘অচাষকৃত শাষ ও ঔষধি গাছগুলো আমরা না চেনার কারণে নষ্ট করি। এগুলো সকলের চেনা ও ব্যবহার জানা দরকার। তাহলে এগুলো থেকেই মানুষ উপকৃত হবে।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা চেয়ারম্যান ইসহাক বলেন, “বিশ্ব খাদ্য দিবসের খাদ্য নিয়ে এই আয়োজেন আমি সত্যিই অভিভুত। নির্ভেজাল এই শাকগুলো আমি প্রত্যেকের রান্না করা শাকের স্বাদ গ্রহণ করেছি। ঔষধি গুনাগুণ সমৃদ্ধ অনেক অচাষকৃত উদ্ভিদ আছে যেগুলো শাক হিসেবেও খাওয়া যায়। এই শাকগুলো গ্রহণ করার অর্থ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। আমাদের নিজেদের স্বার্থে সকলেরই উচিত এই শাকগুলো চিহ্নিত পূর্বক সংরক্ষণ করা।’
বারসিকের প্রোগ্রাম অফিসার জাহিদ আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান, মাটিকাটা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আওয়াল রাজু, গোগ্রাম ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান তৈয়বুর রহমানসহ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।