আলো জ্বেলে আঁধার ভাঙার শপথ নিলেন গ্রামীণ নারীরা
সিংগাইর মানিকগঞ্জ থেকে শাহীনুর রহমান
মোমবাতি প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে আধাঁর ভাঙার শপথ গ্রহণ করেন সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের বাংগালা গ্রামের নারীরা। এ আধাঁর রাতের আধাঁর নয়; এ আধার হলো নারীর উপর নির্যাতন, সমাজ রাষ্ট্র ও পরিবারে নানা ধরনের বৈষম্য, সকল বঞ্চনা ও নিপীড়ণ। মোমবাতি প্রজ্বলনের মাধ্যমে এই আধাঁরের বিরুদ্ধে গ্রামীণ নারীরা অগ্নিপ্রতিবাদ জানান।
গত ৭ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র সহায়তায় বাংগালা নব কৃষক কৃষাণী সংগঠন এই আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল নারীদের গ্রামীণ খেলাধুলা, নারী পুরুষ বিতর্ক প্রতিযোগতা, আলোচনা সভা, সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে গ্রামের ৭০ জন নারী, পুরুষ ও শিশু অংশগ্রহণ করেন।
আগুনের পরশমনি গানটির সংঙ্গে সঙ্গে মোমবাতি প্রজ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়। সংগঠনের সদস্য গোলাপি মন্ডলে সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিংগাইর উপজেলা নারী উন্নয়ন কমিটির আহবায়ক সেলিনা বেগম। নারী দিবসের মূল তাৎপর্য তুলে ধরেন বারসিক কর্মকর্তা গাজী শাহাদাৎ হোসেন বাদল। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন নাসিমা, আসমা, অঞ্জনা মন্ডল, সুভাষ মন্ডল, আনন্দ মন্ডল ও বারসিক কর্মকর্তা শারমিন আক্তার।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, ‘সকল বাধা বিপত্তি ও সংগ্রাম করে একজন নারীকে সমাজে টিকে থাকতে হয়। একজন নারী সংগ্রাম করে টিকে থাকার পরও স্বাধীনভাবে পরিবার ও সমাজে কোন মতামত ও সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। আমাদের এই সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে, নারীকে তার প্রাপ্য অধিকার ও মর্যাদা বৃদ্ধিতে নারীর গৃহস্থালী কাজের স্বীকৃতি দিতে হবে।’ বক্তারা আরো বলেন, ‘আমাদের নারী সমাজ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। নারীদের উন্নয়নের রাষ্ট্রীয়ভাবে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও সামাজিক কিছু প্রতিবন্ধকতার কারণে নারীরা নানা জায়গায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। নারীদের উন্নয়নে পুরুষদেরকে সমান ভূমিকা রাখতে হবে।’
অনুষ্ঠানে পারিবারিক, সামাজিক ও পেশাগত নানাক্ষেত্রে বৈষম্যর কথা তুলে ধরেন বক্তারা জানান, নারীর অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষের সমান সহযোতিার মাধ্যমেই তৈরি হবে আমাদের নারীবান্ধব সমাজ। অনুষ্ঠান শেষে বারসিক’র পক্ষ থেকে প্রতিযোগিদের মধ্যে পুরুষ্কার বিতরণ করা হয়।