নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে শতবাড়ি বিশেষ ভূমিকা রাখছে
রাজশাহী থেকে সুলতানা খাতুন
কর্নহার থানার দর্শনপাড়া ইউনিয়নের দিঘীপাড়া গ্রামের নারী বেলি বেগম। বয়স ৩৩ বছর।পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৩ জন। তার স্বামী পেশায় একজন কৃষক। তাদের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। নানান অভাব ও অনটন লেগেই থাকে তার সংসারে। সংসারের সচ্ছলতা আনার জন্য বেলি বেগম নানাভাবে চিন্তা করেন। তিনি ঠিক করেন বাড়ির সামনে পড়ে থাকা জায়গায় সবজি চাষ করবেন।
এভাবে শুরু হয় তার সবজি চাষ। এছাগা বসতবাড়ির আঙ্গিনায় শাকসবজি চাষাবাদের পাশাপাশি হাতের কাজ, ছাগল পালন, হাঁস-মুরগি পালন করেন। এ কাজ করে তিনি সংসারে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করতে পারছেন। তার এ উদ্যোগ দেখে বারসিক কর্মী তার সাথে যোগাযোগ করে তাকে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ ও বীজ বিনিময় করেন। সবজি চাষ যাতে তিনি ভালোমত করতে পারেন সেজন্য বারসিক থেকে তাঁকে কিছু নেট জাল সহযোগিতা করে।
পরামর্শ ও সহযোগিতা পেয়ে বেলি বেগম আরো সুন্দরভাবে শাকসবজি চাষাবাদ শুরু করেন। তিনি পুঁই শাক, লালশাক, সবুজ শাক, পালং শাক, লাউ, কাঠুয়া ডাটা, লেবুসহ শাকসবজি ও ফল বিক্রি করে ভালো হয় করতে সমর্থ হন যা তাঁর পরিবারে বেশ কাজে লেগেছে। সবজি চাষ করে নিজের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি উৎপাদিত শাকসবজি ও ফল পাড়া প্রতিবেশির সাথে বিনিময় করেন। এতে করে তাদের সাথে একটি সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে।
বেলি বেগমের সবজি চাষের সাফল্য দেখে বারসিকের পক্ষে তাঁর বাড়িকে শতবাড়ি উন্নয়ন মডেল পারিবারিক পুষ্টি ব্যাংক হিসাবে চিহ্নিত করে এবং নানানভাবে সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করে। এই প্রেসঙ্গে বেলি বেগম বলেন, ‘আমাকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়ায় আমি ভালোভাবে সবজি চাষাবাদ করতে পারছি এবং উৎপাদিত ফসল বিক্রির টাকা সংসারের বিভিন্ন কাজে লাগাতে পারছি।’ তিনি জানান, তার বাগানের শাকসবজিগুলো বিষমুক্ত ও জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ করায় বাড়িতে থেকেই প্রায় বিক্রি হয়ে যায়।
বেলি বেগম যে সকল সবজি চাষাবাদ করেন তার সবগুলোর বীজ সংরক্ষণ করে রাখেন যাতে পরবর্তীতে তিনি সেই বীজগুলো ব্যবহার করতে পারেন; বীজের ওপর কারও উপর নির্ভর করতে না হয়। এছাড়া যাদের বীজ সঙ্কট রয়েছে তাদেরকে যেন সহযোগিতা করতে পারেন। তার বাড়ির সামনে সবজি দেখে পাড়ার ৩ জন নারী ছোট পরিসরে সবজি চাষ শুরু করেছেন। তার শতবাড়ি নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন অন্যকে সবজি চাষে উৎসাহিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।