তরুণদের উদ্যোগে চরাঞ্চলে শিক্ষা কেন্দ্র চালু
হরিরামপুর থেকে মুকতার হোসেন
হরিরামপুর উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নে হরিহরিদিয়া গ্রাম। গ্রাম থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দুরে সরকারি প্রাথমিক অবস্থিত। বর্ষাকালে ৩ মাস পানি থাকার কারণে স্কুলে পাঠদান বন্ধ থাকে। পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে ১ ঘণ্টা নৌকাােযাগে পাড় হয়ে পায়ে হেটে স্কুলে পৌছুতে হয়। তাছাড়াও শিক্ষকদের বাড়ি মূলভুমিতে হওয়ার কারণে সময়মত বিদ্যালয়ে পৌছিতে পারে না। ফলে স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হয়। শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় অমনোযোগী হয়ে পড়ে। পরীক্ষায় সন্তুষ্টজনক ফলাফল অর্জন করতে না পারায় অনেক কোমলমতি শিক্ষার্থী শিক্ষাজীবন থেকে ঝরে পড়ে। শিশুদের ভবিষ্যত শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হয়ে ঘোর অন্ধকার নেমে আসে। তারা যুক্ত হয়ে যায় কৃষিকাজে, অনেকে কর্মসংস্থানের জন্য ঢাকামূখী হয়ে পড়ে বিভিন্ন পেশা বা কাজের সাথে যুক্ত হয়ে যায়।
চরাঞ্চলে এই কোমলমতি শিশুদের স্কুলগামী করা, ঝরে পড়ার হাত থেকে রক্ষা করে লেখাপড়ায় ফিরিয়ে আনতে তরুণদের উদ্যোগে শিক্ষা কেন্দ্র গঠন করা হয়েছে। চরাঞ্চলের কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক তরুণ যুবক মশিউর, রাসেল, ফয়সাল, আজাদ আরও অনেকে শিশুদের জন্য হরিহরদিয়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলেন। তরুণদের এই উদ্যোগ দেখে এগিয়ে আসেন এলাকার সমাজসেবক, ইউপি সদস্য ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।
এই প্রসঙ্গে হরিহরদিয়া গ্রামের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সেকেন মেম্বর বলেন, “চরাঞ্চলে যাতে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া ভালো হয়, লেখাপড়ার মাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হতে পারে সে জন্য জন্য তরুণরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করে। আমরা চেষ্টা করেছি সার্বিক সহযোগিতা দেওয়ার জন্য।
গত ২৮ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে হরিহরদিয়া গ্রামে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণীর ৪০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শিক্ষা কেন্দ্রটি উদ্ভোধন করা হয়। শিক্ষা কেন্দ্রটির উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে ইউপি সদস্য সেকেন আলী বলেন, “দেশ এগিয়ে চলছে , আমরা পিছিয়ে থাকলে চলবে না, যেভাবেই হোক চরের ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করে তুলে একটি আলোকিত সমাজ গড়তে হবে।” বারসিক আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বলেন, “বারসিক চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বারসিক শিক্ষাকেন্দ্রের ৪০ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে খাতা, কলম, বই, চক-ডাষ্টার, শিক্ষক হাজিরা খাতা, রেজিষ্টার খাতা, সাইন বোর্ডসহ শিক্ষা উপকরণ সহায়তা প্রদান করেছে।”