নুরনাহার বেগমের ভালো থাকার গল্প

সাতক্ষীরা থেকে মুকুন্দ ঘোষ

সংগ্রাম করে ভালো থাকার চেষ্টা করছেন নূরনাহার। শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের মধ্যম খলিসাবুনি গ্রামের মালঞ্জ সিএসও এর সদস্য নুরনাহার বেগম (৬২)। পারিবারিক আর্থিক অনটনের কারণে স্কুলে যাওয়া হয়নি এবং অভাবের কারণে ১২ বছর বয়সে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয় নুরনার বেগমের। নুরনাহার বেগমের ৬ সন্তানের ৪ছেলে ২ মেয়ে কিন্তু ছেলে মেয়ের কেউ নুরনার বেগমের সাথে থাকেনা। বিয়ের পরে মা বাবা রেখে সবাই আলাদা। স্বামী জহুর গাজী (৭০) পেশায় একজন ভ্যান চালক।

নূরনাহার বেগম নেটজ বাংলাদেশে ও বারসিক এর পরিবেশ প্রকল্পের মাধ্যমে একটি ভ্যান সহযোগিতা পান। তাঁর দুইটা চোখে ছ্যানি পড়ার কারণে চোখে ভালো দেখতে পেতো না । লোকের সহায়তায় চলাফেরা করতে হতো।  দলে যখন যুক্ত হন তখন কাউকে ভালোভাবে দেখতে পেতেন না।  সবার কথা শুনে বুঝতে পারতন। তাঁর স্বামী ভ্যান চালিয়ে কিছু টাকা সঞ্চয় করে চোখ অপারেশন করেন।

অপারেশনের পর তিনি এখন চোখে দেখতে পান। ভ্যান সহযোগিতা পেয়ে তাঁদের অনেক উপকার হয়েছে। ভ্যান চালিয়ে টাকা জমিয়ে তাঁর স্বামী তাঁর (নুরনাহার) চিকিৎসা করিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে নুরনাহার বলেন, ‘দাদা এতোদিন তুমি যে আমাদের এখানে আসছো তোমার মুখটাও আমি দেখতে পাইনাই আগে। কিন্তু এখন তোমার মুখটা দেখতে পারছি।’

নুরনাহার ও তাঁর স্বামী খুব কষ্টে জীবনযাপন করতন। সংসারের খরচ মিটাবেন নাকি চোখের চিকিৎসা করবেন বুঝে উঠতে পারেন না অনেকসময়। পরিবেশ প্রকল্পের থেকে ভ্যান সহায়তা পাওয়ার পর তাঁর স্বামী ভ্যান চালিয়ে সংসারের খরচ বহন করে একটু একটু করে সঞ্চয় জমা করে একটা চোখের ছ্যানি অপারেশ করান। ওই চোখটাই এখন মোটামুটি দেখতে পায়। কিন্তু  ডাক্তার বলছেন কিছু দিনের ভিতরে আর একটা চোখ অপারেশন না করতে পারলে যেটা অপারেশন করানো হয়েছিলো ওটাতে আবার সমস্যা দেখা দিবে। বারসিক পরিবেশ প্রকল্পের সহায়তায় ভ্যানটি ক্রয়ের ফলে এখন তার আয় বেড়ে গেছে। প্রতিদিন তিনি এলাকায় ভ্যান চালিয়ে ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকার মত আয় করেন। তাঁর স্বামী আশা করছেন খুব শিগগিরই নুরনাহারের আরেকটি চোখ অপারেশন করা যাবে।

নূরনাহার বেগমের স্বপ্ন তিনি তাঁর নিজের ভ্যানটিতে একটি মটর সেট করবেন। সেভাবেই তিনি নিয়মিত সঞ্চয় করছেন।

happy wheels 2

Comments