এই জমিতে বৈচিত্র্যময় গম চাষ
রাজশাহী থেকে অমৃত সরকার
এই জমিতে পাশাপাশি চাষ হচ্ছে ১৫টি জাতের গম। কোনটির নাম সোবাটি, কোনটির নাম গ্যালাক্সি বা সিদ্ধি থোরী। এমনই সব বাহারি নাম। রাজশাহীর তানোর উপজেলার দুবইল গ্রামে কৃষক ও বারসিক’র যৌথ উদ্যোগে কার্যক্রমটির নাম “কৃষক নেতৃত্বে গম বৈচিত্র্য সংরক্ষণ”। প্রায়োগিক কৃষি গবেষণার আওতায় রবিশস্য, ধান, মসলা, বেগুন বৈচিত্র্য গবেষণার পাশাপাশি চলতি রবি মৌসুমে গম নিয়ে এই কাজটি শুরু হয়। এই এলাকার কৃষকদের আন্তর্জাতিকভাবে অংশগ্রহণ করা কোন ইভেন্ট থেকে এই গমের বীজগুলো সংগ্রহ করা।
উক্ত গবেষণার কাজে যুক্ত আছেন দুবইল গ্রামের কৃষক মোঃ মুজাহারুল ইসলাম(৬০)। তার ৭.৫ শতাংশ জমিতে গমগুলো চাষ হচ্ছে। সকল পরিচর্যা তিনি করেন। কখন সেচ দিতে হবে আবার কখন আগাছা নিড়ানী দিতে হবে তিনিই ঠিক করেন। নতুন জাত বলে গ্রামের অন্য কৃষকরাও এসে আগ্রহ নিয়ে সহযোগিতা করেন তার বিভিন্ন কাজে। এ বিষয়ে গবেষণা পরিচালনাকারী কৃষক বলেন, “আমি এর আগে এক সাথে এত গুলো গমের জাত কখনও দেখিনি। আমাদের দেশী গমের মতোই এই গমেরও পরিচর্যা করছি। তাতে দেখা যাচ্ছে ৫টি গম আমাদের এলাকা উপযোগি হবে। আমি সব গমই ভালো করে সংরক্ষণ করতে চাই। বীজ যাতে হারিয়ে না যায়।’
একসাথে ১৫ জাতের গম চাষ সম্পর্কে দুবইল গ্রামের বরেন্দ্র কৃষক বীজ ব্যাংকের বর্তমান সভাপতি মোঃ জায়দুর রহমান বলেন, “আমাদের গ্রামের কৃষকরা অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে এই কাজটি দেখছেন। এখন কোন কোন জাতের শীষ বের হচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি এখান থেকে ৫টি জাত আমাদের এলাকা উপযোগি হবে। কারণ এগুলো স্বল্প মেয়াদী হবে বলে মনে হচ্ছে। কোন কোনটি আবার এতো ঝাপড়া বা ডালপালা বেশি যে মনে হচ্ছে এগুলো গো-খাদ্যর জন্য উপযোগি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আসলে আমরা দেখতে চাই কোন কোনটি ভালো হয়। ভালো জাতগুলো আমরা অন্য কৃষকদের ছড়িয়ে দিব এবং অন্য জাতগুলো বরেন্দ্র কৃষক বীজ ব্যাংক থেকে প্রতিবছর চাষের মাধ্যমে জীবিত রাখব।
কৃষক ও বারসিক’র যৌথ উদ্যোগের এ ধনের কাজের মাধ্যমে একদিকে যেমন এলাকায় জাত বৈচিত্র্য বৃদ্ধি হবে অপরদিকে কৃষকরা পছন্দ মতো জাতগুলো নিয়ে চাষ করতে পারবেন। কৃষকদের সমৃদ্ধ হবে ফসল বৈচিত্র্য।