খাদ্য সংকট মোকাবেলায় বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ
মানিকগঞ্জ থেকে রুমা আক্তার
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা ইউনিয়নের বেতিলা গ্রামের আছিয়া বেগম একজন কৃষাণী ও গৃহিনী। তিনি সংসারের পাশাপাশি কৃষি কাজও করেন। সংসারে স্বামী আক্কাস আলী, দুই ছেলে/মেয়ে ও বয়স (৯৫)বছর উর্ধ্ব বৃদ্ধা শ্বাশুরি নিয়ে তার পরিবার। স্বামী আক্কাস আলী রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাই সংসারের সাথে কৃষি কাজও করেন আছিয়া বেগম।
আছিয়া বেগম বলেন, ‘বর্তমান সময়ে ফসল আবাদ কঠিন হয়ে পড়েছে। আগের মত বৃষ্টি হয় না, পানি হয় না, মাটিতে রস নাই । কি করে ভালো ফসল হবে? আবার যাও বৃষ্টি হয় তাতে আগের মত বন্যা হয় না। আর বন্যা না হলে মাটির জালা বের হয় না। আগে বন্যা হওয়ার পর সেই মাটিতে যে কোন ফসল ভালো হতো।’ তিনি আরও বলেন, ‘আবার নদী-খাল বা পুকুরগুলোতেও আগের মত পানি থাকে না। রোদের তাপও এত যে নদী-খাল বা পুকুরের পানি শুকিয়ে যায়। আবার পরিবারের লোক সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য মানুষ খাল বা পুকুর ভরাট করে ঘরবাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। এতে আমাদের কৃষি জমির পরিমাণও কমে যাচ্ছে।’
আছিয়া বেগম জানান, এখন তো আগের মত সবজি আবাদ হয় না, বাজারে যাও সবজি আছে তার অনেক দাম। তাই নিজেদের খাদ্য সংকট মোকাবেলায় বাড়ির আঙিনায় ও পাশের অল্প জমিতে সবজি আবাদ করেন। আছিয়া বেগম বাড়ির আঙিনায় সিম, বেগুন ও লাউ লাগিয়েছেন। আবার বাড়ির সাথে জমিতে ফুল কপি, সিম, বেগুন, লাউ, শসা, পালং শাক,মরিচ, খেসারি কলাই, ঢেরস, পুঁই শাক ও কলা আবাদ করেন। এতে আছিয়া বেগমের পরিবারের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়। সারাবছরই এই জমিতে একের পর এক সবজি আবাদ করেন তিনি। এতে পরিবারের পুষ্টি ও খাদ্য চাহিদা যেমন পূরণ হয়, তেমনি আর্থিক সঞ্চয়ও হয়।
এই প্রসঙ্গে আছিয়া বেগম বলেন, ‘বাড়ির পাশে সাড়ে ১৮ শতাংশে গম চাষ করেছি। এখন আমাদের গ্রামে কেউ গম চাষ করেন না। আগের মত পানি না হওয়ায় এখন অনেক ফসলই আবাদ হয় না।’ আছিয়া বেগমের শ্বাশুরি (৯৫) নছিমন বেগম বলেন, ‘আগে বর্ষাকালে ঘর থেকে বের হওয়া যেত না, খাল-বিল, নদীতে পানিতে থৈ থৈ করতো। নদীতে কত রকমের মাছ ছিল। এখন তো সেসব মাছ আর দেখা যায় না!’