সাতক্ষীরায় বাড়িতে বাড়ি চলছে আমসত্ত্ব তৈরীর ধুম
আসাদ রহমান সাতক্ষীরা থেকে:
জ্যোষ্ঠ্যের মধু মাসে আমের রাজ্যে সাতক্ষীরায় বাড়িতে বাড়িতে আমসত্ত্ব তৈরীর ধুম পড়ে গেছে। শহরের রাজার বাগান, ধুলিহর, মুনজিতপুর, মেহেদিবাগ, আলিয়া মাদ্রাসা পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি বাড়িতে নারীরা আমসত্ত্ব তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছে।
মুক্ততথ্য কোষ উইকিপিডি সূত্রে জানা গেছে, আমসত্ত্ব হল ফল থেকে তৈরি একটি বিখ্যাত মিষ্টি খাবার। আমসত্ত্ব তৈরিতে আম ব্যবহার করা হয়। আমসত্ত্ব আমের মৌসুমে পাঁকা আমের রসালো অংশ থেকে প্রস্তুত করা হয়। এই খাদ্য বা মিষ্টি গ্রাম-বাংলার প্রায় প্রতিটি ঘরে প্রস্তুত করা হয়ে থাকে। এর উপকরণ: ১) আম চটকে নেয়া ২) চিনি ৩) সরিষার তেল প্রয়োজনমত দিতে হবে।
শহরের মেহেদীবাগ এলাকার গৃহিনী শামিমা জামান বলেন, “আবহাওয়া ও পরিবেশ গত কারণে সাতক্ষীরার আম অনেক আগে পেকে যায়। যে আমগুলো বেশি পেকে যায় সেই আম দিয়ে আমসত্ত্ব তৈরী করি। এটি তৈরী করতে প্রথমে আম চটকে নিতে হয়। এবার একটি বাঁশের কুলা, ডালা বা পছন্দের পাত্রে সরিষার তেল মাখিয়ে তার ওপরে লেপে দিতে হয়। তারপর এই কুলা বা ডালাকে রোদে দিয়ে শুকিয়ে কৌটায় ভরে সংরক্ষণ করে সারা বছর খাওয়া যায়। আমার স্বামী প্রবাসে থাকে। এটা তার খুবই প্রিয়। তার কাছে পাঠিয়ে দেই।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারধণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ মে থেকে ৪র্থ বারের মতো ইউরোপের বাজারে সাতক্ষীরার আম রপ্তানি শুরু হয়। প্রথম ধাপে আম পাঠানো হবে ইউরোপীয় ইউনিভুক্ত দেশ ইতালি, ফ্রান্স, জার্মান, যুক্তরাজ্য ও স্পেনে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন চেইন শপে এই আমগুলো পাওয়া যাবে।
শহরের বড় বাজারের মসল্যা ভান্ডারের সত্ত্বাধিকার আবুল কাশেম বলেন, “সাতক্ষীরায় আমের চাষ বেশী হওয়ার কারণে প্রতিটি বাড়িতে আম গাছ আছে। আম একটু বেশি পেকে গেলে সেটা দিয়ে গ্রামের নারীরা আমসত্ত্ব তৈরী করে। তারা আমাদের কাছে এসে দিয়ে যায়। আমরা ২০০ টাকা করে কেজি বিক্রি করছি।”
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কমর্কতা ও বিদেশে আম রপ্তানির সমন্বয়ক কৃষিবিদ আমজাদ হোসেন বলেন, “জেলার আম সারাদেশে সুনাম কুড়িয়েছে। গত তিন বছর ধরে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। জেলার আম্রপলি, ল্যাংড়া, হিমসাগর ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে ২০০ মেক্টিক টন আম রপ্তানি হবে। জেলার ৮৪ জন আম চাষীর ৬৪ হেক্টর জমির আম বিদেশে পাঠানোর জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে চলতি মৌসুমে জেলা থেকে ২২ হাজার ৮৩৪ কেজি বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া ও পরিবেশ গত কারণে এই জেলার আম সুস্বাদু হয় ও সবার আগে পেকে যায়। একটু বেশী পাকা আম দিয়ে গ্রামের নারীরা আমসত্ত্ব তৈরী করে।”