সাম্প্রতিক পোস্ট

এটাই আমার একমাত্র সম্বল

রাজশাহী থেকে অমৃত সরকার
একটা তাল পাতা দিয়ে বানানো ঘর! না এটা কোন খেলাঘর নয়। এটা মনোকা বালার (৭২) একমাত্র সম্বল। ঘরের মধ্য নেই কোন চকি বা মাদুর। আছে শুধু দুইটি কাঁথা আর কিছু ধানের খড়, যা দিয়েই এই গোটা শীতের রাত্রি পার করে দিয়েছেন নিদারুণ কষ্টে। না, এই কষ্টের কথা তেমন কাউকেই বলতেও পারেননি। আগে বসবাস করতেন রাজশাহীর তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের মাদারীপুর গ্রামে। স্বামী মারা যাওয়ার পর অভাব অনটনের সংসারে ছেলেমেয়েরা জানিয়ে দেয় তারা আর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিতে পারবে না। আবার থাকার ঘরের অভাবে তিনি ২ বছর আগে চলে আসেন একই উপজেলার তানোর পৌরসভার চাপড়া গ্রামের একটি খাস জমিতে। সেখানে বসবাস করেন সাওতাঁল, কাঁমার, পাহান ও বৈরাগী সম্প্রদায়ের ১৪ ঘর লোক বসবাস করে।

চাপড়া গ্রামে এসে চরম আর্থিক সংকটের মধ্য কি করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না মনোকা বালা। নিজে চিন্তা করে রাস্তার ধারের তাল গাছ থেকে কিছু তালের পাতা সংগ্রহ করে কোন রকমভাবে ধার দেনা করে তিনটি টিন কিনে মাথা গোজার ঠাঁই করেন। মানুষের থেকে সাহায্য নিয়ে এবং নিজে আলু লাগানোর ও আলু তোলার শ্রমিকের কাজ করে যা আয় হয় তা দিয়েই কোন রমক দু’বেলা ভাতের ব্যবস্থা হয়। অসুস্থ হলে ঔষধ কিনতে ভোগ করতে হয় নিদারুণ কষ্ট।


মনোকা বালা সরকারি কোন সেবা পাননি এ পর্যন্ত। সরকার যে বয়ষ্ক ভাতা দেয় সেই বিষয়ে তাঁর কোন ধারণা নেই। পরিচয়পত্রে তাঁর বয়স এখন ৭২ বছর। জানা থাকলে তিনি এখন বয়স্ক ভাতা পেতেন। বয়স্ক ভাতা পাবার জন্য কার সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং কোথায় যেতে হবে সে বিষয়ে তাঁর কোন ধারণা নেই। কেউ এ বিষয়ে তাঁকে সহযোগিতা করেনি বলে তিনি জানান। বয়ষ্ক ভাতা পাবার যোগ্যতা তাঁর হয়েছে-এ কথা শুনে তিনি খুশি হয়েছে।
মনোকা বালাকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসে বারসিক। বারসিক’র কর্মকর্তা আয়েশা তাবাসুম। মনোকা বালার কাছ থেকে কাজপত্র, ছবি নিয়ে বয়ষ্ক ভাতার ফর্ম ফিলাপ করে দিয়ে সহযোগিতা করেন। তিনি আশা করছেন খুব শিগগিরই মনোকা বালা বয়স্ক ভাতা পাবেন।


প্রান্তিক মানুষকে সরকারি সুযোগ ও সুবিধা পেতে সহযোগিতা করার মাধ্যমে তাঁদের অবস্থা ও অবস্থানের পবির্তন করা যায়।

happy wheels 2

Comments