সাম্প্রতিক পোস্ট

বিশ্ব পানি দিবসে নদী দখল ও দূষণ রোধের দাবি

সিংগাইর মানিকগঞ্জ থেকে বিউটি সরকার

গতকাল বিশ্ব পানি দিবসে ‘পানির মূন্যায়ন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে সিংগাইর উপজেলার নয়াবাড়ি এলাকায় ধলেশ্বরী নদী পাড়ে মানববন্ধন করেছেন বায়রা ইউনিয়ন কৃষি উন্নয়ন কমিটির প্রতিনিধিগণ। বারসিক’র সহযোগিতায় ইউনিয়ন কৃষি উন্নয়ন কমিটি কর্তৃক আয়োজিত মানববন্ধনে কৃষি উন্নয়ন কমিটির সভাপতি কৃষক ফরহাদ হোসেন, সহ-সভাপতি রোকেয়া বেগম, ইব্রাহিম মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ইমান আলী, মাছরাঙ্গা টিভির মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি জনাব গাজী ওয়াজেদ আলম ও বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায়সহ বারসিক সিংগাইর রিসোর্স সেন্টারের অন্যান্য কর্মকর্তা বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনের আলোচনায় বক্তাগণ ধলেশ্বরী নদী খনন পরবর্তী রক্ষণাবেক্ষণ, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা রক্ষা এবং পানি দূষণ রোধের দাবি তুলে ধরেন। তারা মনে করছেন নদীমাতৃক বাংলাদেশে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যতা গড়ে উঠেছিল নদীকে কেন্দ্র করে। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বড় বড় নদীর স্বাভাবিক গতিতে মন্থরতা এসেছে। ফলে দেশের অভ্যন্তরে ছোট ছোট নদীগুলো আজ বিলুপ্তির পথে। অধিকাংশ নদী আজ মানুষের দখলে চলে গেছে। ছোট নদীগুলো পানি শুন্য থাকায় কৃষি কাজে ভূ-গর্ভস্থ পানির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার বেড়েছে, যা কৃষি জমিতে আর্সেনিক এবং আয়রনের মাত্রা বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করছে।


মানববন্ধনে বক্তারা আরও জানান, ছোট নদীগুলোতে সারাবছর বছর পানি না থাকায় মাছ সহ জলজ প্রাণ সম্পদের সংকট ও বিলুপ্তির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া নদীতে কলখারখার বর্জ্য ফেলে দেওয়ার কারণে পানি দূষণে নিরাপদ পানির কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। দেশের আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় বর্তমান সরকারের মহতী উদ্যোগের প্রশংসা করেন। বিশ্ব পানি দিবসকে সামনে রেখে ধলেশ্বরীর মত যে সব নদী খনন করা হচ্ছে বা হয়েছে, সেসব নদীর অবৈধ দখল, দূষণ রোধ ও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানান।

এ প্রসঙ্গে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই এ নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। প্রতিবাদ জানাতে হবে অবৈধ দখল ও দূষণের বিরুদ্ধে।’ বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায় বলেন, ‘ধলেশ্বরী নদী খননের দাবিতে বারসিক, ধলেশ্বরী নদী বাচাঁও আন্দোলন কমিটি, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, সাংবাদিক, এলাকার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ দীর্ঘ দশ বছর ধরে আন্দোলন করে আসছিল। সে আন্দোলন আজ স্বার্থক হয়েছে। আজ ধলেশ্বরী নদী প্রাণ ফিরে পেয়েছে। তাই আমাদের দায়িত্ব এ নদীকে সজীব রাখা।’


পরিশেষে ধলেশ্বরী নদীর পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় নাগরিক দায়িত্ব পালনে প্রতীকি আবর্জনা পোড়ানো কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার নদী খননের মহতী উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে হারানো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে খনন শুরু হয়েছে ধলেশ্বরীর মত ছোট বড় বেশ কিছু নদী। তবে নদী খনন যেমন জরুরি, তেমনি খনন পরবর্তী নদী রক্ষার বিষয়টিও ততোটাই জরুরি বলে মনে করছেন এলাকার সুধীজন।

happy wheels 2

Comments