একটি শক্তিশালী সংগঠন গ্রামের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে
শ্যামনগর, সাতক্ষীরা থেকে বিশাবজিৎ মন্ডল
বারসিক’র উদ্যোগে গতকাল (২২ সেপ্টেম্বর ২০২১) শ্যামনগর উপজেলার পারলিক লাইব্রেরি কক্ষে জনসংগঠন ব্যবস্থাপনা বিষয়ক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মশালায় বারসিক আঞ্চলিক সমন্বয়কারী পার্থ সারথী পালের সভাপত্বিতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান, উপকূলীয় এলাকার আগ্রহী ও উদ্যোগী জেলে, কৃষক, বনজীবী, স্বেচ্ছাসেবক টিম, নারী সংগঠনের প্রতিনিধি ও বারসিক কর্মকর্তাসহ মোট ২২ জন অংশগ্রহণ করেন
।
কর্মশালার মূল আলোচক উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান সংগঠন ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি সংগঠন কি, কেন দরকার, তার প্রয়োজনীয়তা কি, সমাজ সেবা অফিস থেকে কিকি সেবা পাওয়া যায় এবং তা কিভাবে পাওয়া যায়, কিভাবে নিবন্ধন করতে হয় সে বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘ উপকূলীয় এলাকায় সংগঠনের সংখ্যা একটু বেশি। এখানকার মানুষেরা নানান ধরনরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হন। মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েন। আর সেখান থেকে বের হওয়ার জন্য তারা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করেন। ভালো কিছু করার জন্য সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা আছে। সংগঠন তৈরিতে যেমন বিভিন্ন নিয়ম কানুন আছে। সেগুলো সঠিকভাবে পালন করতে পারলে ভালো সংগঠন তৈরি হবে। আর সবার আগে চিন্তা করতে হবে আমরা কেন সংগঠন করবো, করে কি কাজ করবো সে বিষয়ে পরিস্কার হতে হবে। সংগঠন নিবন্ধন করতে পারলে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাবে।’ তিনি যে যেকোন ধরনরে সমস্যা নিয়ে তার কাছে হাজির হলে তা সমাধান করার চেষ্টা করবেন বলে জানান।
সভায় অংশগ্রহনকারীরা জানান, ‘আজ এ আলোচনার মাধ্যমে আমাদের সংগঠিত হতে উদ্বুদ্ধ করেছে। আমরা সংগঠন সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম। একটা শক্তিশালী সংগঠন একটা গ্রামের উন্নয়নে ভালোই ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা এ তথ্যগুলো আমাদের গ্রামে ও সংগঠনের সদস্যদের সাথে সহভাগিতা করবো। ’
এর আগে বারসিক কর্মকর্তা গাজী আল ইমরানের সঞ্চালনায় কর্মশালার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য ও কর্মশালার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন বারসিক’র পার্থ সারথী পাল ও বিশ^জিৎ মন্ডল। তারা জানান, বারসিক উপকূলীয় এলাকায় ২০০১ সাল থেকে সরাসরি মাঠ পর্যায়ে স্থানীয় বিভিন্ন পেশাজীবী জনগণের মাঝে তাদের কর্মউদ্যোগ ও প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি পারস্পরিক ঐক্য ও সমন্বয়ে সংগঠন গড়ে তুলতে সহযোগিতা করেছে। তারই ধারাবাহিক কর্মপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিভিন্ন পেশাজীবী প্রায় ৬৩টি জনসংগঠন গড়ে উঠেছে। সেখান থেকে নতুনভাবে তৈরি ও আগ্রহী উদ্যোগী কিছু সংগঠনের প্রতিনিধিদের এখানে হাজির করা হয়েছে। তারা এখানে আজ সংগঠন কি, সংগঠন কেন জরুরী, কিভাবে সংগঠন তৈরি হয়, সংগঠনের কি ধরনের তথ্যাবলী রাখতে হয়, সংগঠন কার্যক্রম কেমন হওয়া দরকার, নিবন্ধন কিভাবে করতে হয়। সাথে সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে কি ধরনের সহায়তা প্রদান করা হয় সে বিষয়ে তারা অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন। মূলত ধারাবাহিকভাবে জনসংগঠনগুলো শক্তিশালীকরণ, জনসংগঠনের প্রতিনিধিদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সরকারী/বেসরকারী ও স্থানীয়দের অংশগ্রহণে পারস্পরিক উন্নয়নের জন্য এই কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়েছে।