কৃষকের ঘরে ঘরে হেকিম ধান

কৃষকের ঘরে ঘরে হেকিম ধান

নেত্রকোনা থেকে নূরুল হক ও আব্দুল বারী
বীজের সমস্যা সমাধানের জন্য সাধুপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হেকিম গত ২০০৯ সালে শুরু করেছিলেন কৃষক নেতৃত্বে ধানের জাত গবেষণা। কৃষক আব্দুল হেকিম একজন মাটি ও মানুষের কৃষক। ছোটবেলা থেকেই কৃষি কাজের সাথে জড়িত। তাঁরই বাছাই করা হেকিম ধানটি। মাঠ থেকে একটি ধানের শীষ আলাদাভাবে দেখতে পান। তিনি সেই ধানের শীষ সংগ্রহ করে চাষ করেন। গত চার বছর ধরে চাষ করে ্এখন ময়মনসিংহ জেলার তারা কান্দা উপজেলার সাধুপাড়া,নগুয়া, তারাটি, খিচা, কোদালিয়া, চরফরিদপুর, গজহরপুরসহ ১৯টি গ্রামের ২০০ জন কৃষক হেকিম ধান চাষ করছেন।


তাছাড়া এ অঞ্চলে গত বছরগুলোতে গবেষণার মাধ্যমে ২২টি স্থানীয় ধানের জাত মনগির, তিলবাজাই, তুলসিমালা, সোহাগ, রতিশাইল, কালোজিরা, সুবাশ, মরিয়ন, সতিন, বিরই, অগনঢেপি, ভূইট্টা আইজংসহ ২২টি জাত নিয়ে গ্রামের কৃষকদের নেতৃত্বে প্রায়োগিক ধানজাত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেছিলেন কৃষক আ: হেকিম। সেই ২২টি জাতের মধ্যে ভালো ফলন, ধান গাছ হেলে পড়েনা, ধানের ওজন বেশি এসব বৈশিষ্টের ভিত্তিতে কৃষকরা এলাকা উপযোগি হেকিম, মালশিরা,কাবুনডুলান, বিরই, রতিশাইল, তিলবাজাই ধান চাষের জন্য পছন্দ করেন। ধানের জাতগুলো এলাকার জন্য উপযোগি হিসেবে নির্বাচন করেন। ২০১৯ সালের আমন মৌসুমে গ্রামের ১৭ জন কৃষক তাদের জমিতে পৃর্থক পৃর্থকভাবে আ: হেকিমের ধান চাষ করে ভালো ফলন পান। দিন দিন কৃষকের কাছে মালশিরা ধানের চাহিদা বেড়ে যায়। ২০২০ সালের আমন মৌসুমে কৃষক আবুল হেকিম ১২০ শতাংশ জমিতে হেকিম ধান চাষ করলে ধানটি গ্রামের কৃষকদের নজর কাড়ে। ২০২১ সালে আমন মৌসুমে আশুজিয়া ও র্প্শ্ববর্তী গ্রাম নগুয়া, তারাটি, খিচা, কোদালিয়ার ৪৩ জন কৃষক ১৮ একর জমিতে হেকিম চাষ করেন।


২০২২ সালে তারাকান্দা উপজেলার ১৯টি গ্রামে ১২২ জন কৃষক হেকিম ধানের বীজ সংগ্রহ করেন। তাদের ৩৫ একর জমিতে চাষ করে প্রতি শতাংশে ২৫ কেটি ধান পেয়েছে। এলাকার কৃষকদের ধারণা আগামি বছর উপজেলার অনেক গ্রামেই হেকিম ধান ছড়িয়ে পড়বে।


এই প্রসঙ্গে তারাকান্দা উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের কৃষক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমি হেকিম ধানের ভালো ফলনের কথা শুনে বীজ সংগ্রহ করতে এসেছি। আমন মৌসুমের জন্য কৃষক নেতৃত্বে প্রাযোগিক কৃষি গবেষণায় বাছাই করা হেকিম ধান, মালশিরা, কাবুনডুলান, সোহাগ-৪, মনগির ভালো ফলন দিচ্ছে। কৃষকেরা ধানের এই বাছাই পদ্ধতির মাধ্যমে নিজেদের বীজের চাহিদা পূরণ করতে পারবে। কৃষক নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করতে পারবে এবং কৃষকদের বাজারের নির্ভরশীলতা কমে আসবে।’

happy wheels 2

Comments