মাহমুদা বেগমের সমন্বিত কৃষিচর্চা

রাজশাহী থেকে সুলতানা খাতুন

পবা উপজেলার দশর্নপাড়া ইউনিয়নের বিলধর্মপুর গ্রামের কৃষাণী মাহমুদা বেগম (৫৪)। স্বামী মোঃআজিজুল হক। পরিবারে সদস্য সংখ্যা পাঁচ জন। তার বসতভিটার জমির পরিমাণ ২০ শতাংশ। আবাদী জমির পরিমাণ ৯৬ শতাংশ। মাহমুদা বেগম তার জমিতে সারাবছর বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি ও বিভিন্ন ধরনের ফসলের চাষ করেন। তিনি বাড়ির আশেপাশে অনেক ফাঁকা জায়গায় সবজির চাষ করেন। তার উৎপাদিত সবজি পরিবারের চাহিদা পূরণ করে বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করে সংসারে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করেন। মাহমুদা বেগমের স্বামী কৃষির সাথে জড়িত। তাই মাহমুদার কৃষিকাজ অনেকটা সহজ। কারণ তার স্বামী তাকে সবসময়ই সকল কাজে সহযোগিতা করেন। সবজি চাষ করে অল্প অল্প করে টাকা জমিয়ে বন্ধক থাকা জমিগুলো ছাড়িয়ে নিয়েছেন।

মাহমুদা বেগম ১৭ শতাংশ আবাদী জমিতে কলাচাষ করে ভালোই আয় করছেন। তিনি এ পর্যন্ত পনের হাজার টাকার কলা বিক্রি করেছেন। আরো অনেক টাকার কলা বিক্রি করতে পারবেন আশা করেন তিনি। তাঁর অন্য জমিগুলোতে তিনি বেগুন, টমেটো ও বাঁধাকপি লাগিয়েছে। এছাড়া তাঁর বসতভিটায়ে ফাঁকা জায়গাগুলোতে তিনি চালকুমড়া, ধুমা, তরইসহ অনেক ধরনের সবজি রয়েছে। অন্যদিকে তাঁর একটা পুকুর রয়েছে সেখানে তিনি অনেক ধরনের মাছ চাষ করেন।

মাহমুদা বেগম শুধু সবজি, কলা এবং মাছ চাষই করেন না তিনি গবাদিপশু পাখিও পালন করেন। তার বাড়িতে পনেরটি মুরগি, পাঁচটি পাতিহাঁস, দুইটি গরু, দুটি ছাগল রয়েছে। তিনি তাঁর পরিবারের আমিষের চাহিদা পূরণ করে মাছ, দুধ, ডিম বাজারে বিক্রি করেও আয় করেন। করোনাকালীন সময়ে বিলধর্মপুর নারী সংগঠনের নারীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি বিনিময় করেছেন তিনি। এছাড়া তিনি তার শাকসবজি ও অন্যান্য ফসলের বীজ সংরক্ষণ করেন এবং কারও প্রয়োজন হলে তিনি তাদের সাথে বিনিময় করেন। মাহমুদা বেগম বলেন, ‘আমি বীজ সংরক্ষণ করি। যাতে করে বীজের জন্য কারও ওপর নির্ভরশীল হতে না হয়। এছাড়া কারও দরকার হলে যাতে তাদের সহযোগিতা করতে পারি। নিজে বীজ সংরক্ষণ করলে সেগুলো পুষ্ট ও মানসম্মত হয়।’ তিনি এ পর্যন্ত চল্লিশ ধরনের বীজ সংরক্ষণ করেছেন এবং আরও বীজ সংরক্ষণ করবেন বলে জানান।

happy wheels 2

Comments