সরকারি অনুদানে শ্মাশানঘাটে প্রাণের সঞ্চার

মানিকগঞ্জ সিংগাইর থেকে শিমুল বিশ্বাস
জরাজীর্ণ অবস্থা কাটিয়ে পরিত্যক্ত শ্মশান এখন মহাশ্মশান। সিংগাইর উপজেলার সুযোগ্য নির্বাহী অফিসার দিপন দেবনাথ মহোদয়ের আর্থিক ও আন্তরিক সহযোগিতায় সম্প্রতি বায়রা শ্মশানঘাটটি সংস্কার করা হয়েছে। সরকারি তরফ থেকে ৩০০ গাড়ি মাটি ভরাট ও বাউন্ডারি প্রাচীর দেওয়ার জন্য আড়াই লাখ টাকা প্রাপ্তির ফলে জরাজীর্ণ শ্মশান ঘাটটি এখন মৃতদেহ সৎকারের জন্য ব্যবহার উপযোগি হয়ে উঠেছে। তারা উল্লেখ করেন শ্মশানঘাটের বেহাল দশা দেখে প্রথমে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক এগিয়ে আসে। এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়কে একত্রিত করে এবং শ্মশানঘাট সংস্কারের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে সম্পৃক্তকরণ ও আর্থিক অনুদান প্রাপ্তির যাবতীয় কার্যক্রমে সহায়তা করে সামাজিক উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান বারসিক। পরিত্যাক্ত শ্মশানটি সংস্কারে সহায়তা করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বারসিককে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন শ্মশানঘাট পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ।


সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের বায়রা ও সানাইল গ্রামে ৪০০ শতাধিক হিন্দু পরিববারের বসবাস। এতগুলো পরিবারের মৃতদেহ সৎকার করার জন্য একটি মাত্র শ্মশানঘাট। উক্ত শ্মশানঘাটের বেহাল অবস্থার কারণে এলকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন দীর্ঘদিন যাবৎ মৃতদেহ সৎকার করতে গিয়ে নানান প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়ে আসছিল। শ্মশানের নির্ধারিত জমি ছিলো কিন্তু ব্যবহার উপযোগি ছিলো না। সম্প্রতি এ সম্প্রদায়ের লোকজনের সংগৃহীত নিজস্ব অর্থ এবং সরকারী অনুদানে শ্মশানঘাটটি সংস্কারের ফলে মৃতদেহ সৎকারের উপযোগি হয়ে ওঠেছে। শ্মশান কমিটির সভাপতি স্বপন হালদার জানান, ‘এক সময় শ্মশান ঘাটের দুরবস্থার কারণে মাঝে মধ্যে মৃত দেহ জলে ভাসিয়ে দিতে হয়েছে। এখন আমাদের আর কোন দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।”


উল্লেখ্য যে, গত জুলাই ২০২২ বায়রা জয়নাল মার্কেটে জনসচেতনতামূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনে সহায়তা করে বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক। উক্ত অনুষ্ঠানে সিংগাইর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিপন দেবনাথ মহোদয়কে প্রধান অতিথি করে এবং শ্মশানঘাট উন্নয়নের জন্য সুপারিশ করে এ প্রতিষ্ঠানটি। তারই প্রেক্ষিতে ইউএনও মহোদয় দ্ইু লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রদান করে শ্মশানঘাট উন্নয়নে সহয়তা করে।


সম্প্রতি বায়রা শ্মশানঘাটের বাৎসরিক কালীপূজা অনুষ্ঠানে বেসরকারী প্রতিষ্ঠান বারসিক’র সহায়তায় শ্মশান কমিটির সদস্যবৃন্দ ইউএনও মহোদয়কে আবারও আমন্ত্রণ করেন। এবারও নিরাশ করেননি ইউএনও মহোদয়। তিনি বায়রা প্রধান সড়ক থেকে শ্মশানঘাট হয়ে নয়বাড়ি বটতলা পর্যন্ত অর্ধকিলোমিটার পাকারাস্তা নির্মাণ এবং শ্মশানঘাটের কালীমন্দির নির্মাানের জন্য ২ লক্ষ টাকা অনুদান প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ বিষয়ে সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে দুটি পৃথক আবেদন ইউএনও বরাবর আবেদন করা হলে তিনি বলেন, ‘রাস্তার কাজটি চলতি মাসের মধ্যে শুরু করা হবে। তবে কিছুদিন আগেই যেহেতু শ্মশানের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তাই মন্দির নির্মাণের অর্থ পেতে একটু বিলম্ব হতে পারে।”


সিংগাইর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র আন্তরিক সহযোগিতার কারণে জরাজীর্ণ শ্মশানঘাটে প্রাণের সঞ্চার ঘটেছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

happy wheels 2