কৃষক মনির উদ্দিনের তিল চাষ
রাজশাহী থেকে সুলতানা খাতুন
বরেন্দ্র অঞ্চল খরাপ্রবণ অঞ্চল। এ অঞ্চলের প্রধান দুর্যোগ হলো খরা। বর্তমানে এ অঞ্চলে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। চৈত্র ও বৈশাখ মাসে টিউবওয়েল, গভীর নলকূপে পর্যাপ্ত পানি উঠছে না। বোরো মৌসুমে ধান চাষে ব্যাপক খরচ হচ্ছে বলে কৃষকরা জানান। কারণ এ সময় পানি সংকট, সার সংকট, ধান তোলার সময় আবহাওয়া ভালো না থাকায় শ্রমিক সংকটও দেখা দিয়েছে। তেতুলিয়া ডাংগা গ্রামের কৃষক মনির উদ্দিন (৫৫) বলেন, বোরো ধান আবাদ করে আমাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কারণ পানির প্রচুর সঙ্কট বিধায় সেচ দেওয়া যাচ্ছেনা। এছাড়া সার ও শ্রমিক সঙ্কটও দেখা দিয়েছে।
মনির উদ্দিনের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৫ জন্য । বসতি ভিটার পরিমাণ ১৮ শতক। কৃষি জমির পরিমাণ ৮ বিঘা। আমন, বোরো মৌসুমে তিনি ধান চাষ করেন। এছাড়া শাকসবজিও যেমন পটল, করলা,রসুন, পিয়াজ,ধনিয়া,পাট এবছর চাষাবাদ করেন তিনি।
বারসিক ২০১৬ সাল থেকে এই গ্রামে বিভিন্ন রকম সচেতনতা, পরামর্শমূলক কাজ করে থাকে। মনির উদ্দিন তেঁতুলিয়া ডাংগা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সংগঠন এর সদস্য। তিনি পানির সমস্যার কারণে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছে পানি সাশ্রয়ী ফসল আবাদ করবেন। তিনি জানান, এর আগে তেঁতুলিয়া ডাংগা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সংগঠন ও বারসিকের সহযোগিতায় রবিশস্য প্লটে তিল চাষ দেখেছিলেন। তাতে উৎসাহিত হয়ে তিনিও চাষ শুরু করেছেন। এ পর্যন্ত তাঁর তিল মাঠে কোন সার বিষ দেওয়া হয়নি। পানি সেচও দিতে হয়নি। ফলে সেরকম বেশি খরচও হয়নি। ৩৩ শতক জমিতে তিনি এক কেজি কেষ্ট কালো তিল বুনেছেন।
মনির উদ্দিন বলেন, তিল গাছে ফুল এসেছে। জমিতে গিয়ে তাকালে মন আনন্দে ভরে যাচ্ছে। পুরো জমি ফুলে ফুলে ভরা। আমার তিল গাছ দেখে অনেক কৃষক উৎসাহিত হয়েছে। খরচ কম, পানি সেচ কম, ঝামেলা কম। ফলন ভালো হবে আশা করা হচ্ছে ‘ তিনি আরও বলেন, ‘আগামী মৌসুমে আমিসহ আরো অনেক কৃষক তিল চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি নিজে বীজ সংরক্ষণ করে রাখবো। নিজে চাষাবাদ করবো পাশাপাশি অন্যদেরকে চাষাবাদ করার পরামর্শ দিব। এতে খরা প্রবণ এলাকায় পানির ব্যবহার কম হবে।’