বেগুণ চাষে স্বপ্ন দেখছেন চরের কৃষক লোকমান
হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে মুকতার হোসেন
হরিরামপুর চরাঞ্চল গঙ্গাধরদি গ্রামে রাস্তার পাশে ৯০ শতক জায়গায় এ বছর বেগুণ চাষ করে চরাঞ্চলে মানুষের চোখে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কৃষক লোকমান হোসেন। চারদিকে জাল দিয়ে ঘেরা, উপরে নেট জালের ছাইনী ঘেরা দিয়ে রেখেছেন। যাতে পশু পাখি ক্ষতি করতে না পারে। বেগুণ গাছগুলো বাতাসে দোল খাচ্ছে। পাতার আড়ালে লুকিয়ে আছে, বেগুণী রঙের লম্বা লম্বা বেগুণ। রাস্তার ধার দিয়ে মানুষ চলাচল করতে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে বেগুণ টাল কে করছেন! এলাকার অনেক মানুষ লোকমানের বেগুণ চাষের পদ্ধতি কৌশল জানতে চান।
স্থানীয় কৃষ্টপুরী জাতের বেগুণ নিজ হাতে চারা তৈরি করে চাষ করেছেন বেগুণ চাষী কৃষক লোকমান হোসেন (৪০)। তিনি বলেন, ‘আমি বেগুণ ক্ষেতে ৩০ মণ গোবর সার দিয়েছি। যার কারণে আমার বেগুন গাছের চেহারা খুব সুন্দর। রাসায়নিক সার, বিষ ব্যবহার করি নাই। পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য ফেরোমিন ফাঁদ ব্যবহার করেছি। ফলে বাজারে আমার বেগুণ বিক্রি করতে সময় লাগে না।’ চারিদিকে যখন সার বিষের ব্যাপক ব্যবহার, তখন বিষমুক্ত নিরাপদ বেগুণ হওয়ার মানুষের অনেক চাহিদা রয়েছে। কৃষক লোকমান হোসেন এলাকায় বিষমুক্ত নিরাপদ খাবার তৈরিতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছেন। অপরদিকে ফসল উৎপাদনে খরচ কম হচ্ছে। তেমনিভাবে মাটির স্বাস্থ্যও রক্ষা হচ্ছে।
জমি তৈরি, নিড়ানী, বেড়া তৈরি, বালাইনাশকের ব্যবহার খরচসহ ৩০০০০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে লোকমান হোসেনের। তিনি আশা করছেন, বেগুণ বিক্রি করে তিনি এক লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। বর্তমানে তিনি ২৫ টাকা কেজি দরে বেগুণ বিক্রি করছেন। বাজারে তিনি এ পর্যন্ত ২ মণ ২০ কেজি বেগুণ বিক্রি করেছেন। এই প্রসঙ্গে হরিরামপুরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘জৈব উপায়ে বেগুণ চাষে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে এবং নিয়মিতভাবে চরাঞ্চলে কৃষকদের আমরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছি।’
বারসিক এলাকায় কৃষকদের নিয়ে বিষমুক্ত খাদ্য তৈরিতে গ্রাম সভার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করছে। এছাড়া কৃষক সমাবেশ, অভিজ্ঞতা বিনিময় সফর, অভিজ্ঞ কৃষককের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান, বীজ বিনিময়, বিষমুক্ত খাদ্য উৎসব, স্থানীয়ভাবে বীজ বাড়ি তৈরিতে সহায়তা করে আসছে ।