প্রাণবৈচিত্র্য সমৃদ্ধ বাড়িতে নিজ উদ্যোগে আনারস চাষে সফলতা

রাজশাহী থেকে সুলতানা খাতুন 

রাজশাহী অঞ্চলের পবা উপজেলার দর্শন পাড়া ইউনিয়নের বিলধর্মপুর একটি গ্রাম। এ গ্রামের নারীরা মৌসুমকালিন বৈচিত্র্যপূর্ণ শাকসবজি চাষাবাদ করতে পছন্দ করেন। মাহামুদা বেগম (৫৫) এমনই একজন নারী যিনি বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্র্যময় শাক সবজি চাষাবাদ করে। তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৪ জন। স্বামী পেশায় একজন কৃষক। তার বসতভিটার পরিমাণ ৫৫ শতক। বসতবাড়ির আঙ্গিনায় বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্র্যময় শাক সবজি চাষাবাদ করেন তিনি। এসব শাকসবজির মধ্যে রয়েছে সিম, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, পুইশাক, কাঠুয়া ডাটা, লাল শাক, বেগুন, পিয়াজ,রসুন  ইত্যাদি।

সবজির পাশাপাশি খরাসহনশীল সজিনা, ঔল, গড়া  আলু  চাষাবাদ করেন তিনি। তাছাড়াও বাড়ির উঠানে আখঁ চাষ করছেন। তার মধ্যে সবই সময় নতুন কিছু করার উৎসাহ থাকে। বিগত কয়েক বছর ধরে আনারস চাষ শুরু করেছেন তিনি। এলাকায় মূলত আনারস চাষাবাদ হয় না। খুব একটা দেখাও যায় না। বারসিক কর্মী আনারস চাষের অভিজ্ঞতার কথা মাহামুদা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি আমার মা বাবার কাছে শুনেছি কিভাবে আনারস লাগাতে হয়। তাই আমি ভাবলাম আমার বাড়ির আশেপাশে অনেক জায়গা পড়ে আছে। আমি যদি কয়েকটি আনারস লাগাই তাহলে কিনে খেতে হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘একদিন বাজার থেকে আমার স্বামী কয়েকটি আনারস কিনে আনলো। আমি উপরের অংশ মাথাটা কেটে মাটিতে লাগিয়ে দিলাম পরিক্ষামূলকভাবে। সেখান থেকেই শুরু। এখন আমি প্রতিবছর ২০ থেকে ২৫ টি আনারস এখান থেকেই পাই। আমার পরিবার ও মেয়েদের বাড়িতে আনারসের চাহিদা পূরণ হয় এখান থেকেই। আমার আরো বড় পরিসরে আনারস চাষের পরিকল্পনা রয়েছে।’

মাহমুদা বেগম আরো বলেন, ‘আমি যে সবজি চাষাবাদ করি সেটাতেই লাভবান হই। আমার আত্মবিশ্বাস আমাকে বৈচিত্র্যময় ফসল চাষে উৎসাহিত করে। আমি নিজে বীজ সংরক্ষণ করে রাখি। নিজে চাষ করি প্রতিবেশীর সাথে বিনিময় করি।

এখানে উল্লেখ্য যে, বারসিক ২০১৯ সাল থেকে এই গ্রামে কাজ করে। বারসিক কর্মী তাদের বিভিন্নভাবে বীজ সহযোগিতা, পরামর্শ, সচেতনতামূল্ক সভার মাধ্যমে উৎসাহ প্রদান করেন।  মাহমুদা বেগমের আনারস চাষ দেখে গ্রামের অন্য নারীরা উৎসাহিত হয়। তারাও তাদের বাড়ির পাশে আনারস চাষে পরিকল্পনা করেন যাতে তাদের আনারসের চাহিদা পূরণ হয়। 

happy wheels 2

Comments