একজন মানবিক দূত শিরিন সীমা
সাতক্ষীরা শ্যামনগর থেকে রুবিনা রুবি
একটা সময়ে মেয়েদের কোণঠাসা করে রাখতো সমাজের মানুষ পরিবারের মানুষ। ‘মেয়ে মানুষ কেন বাইরে যাবে, কেন খেলতে মাঠে নামবে, দরকার নেই বেশি লেখাপড়া করার।’-এ ধরনের কথা শোনা যায় প্রায়ই।
কিন্তু এসবের গন্ডি পেরিয়ে আজ মেয়েরা জয় করেছে বাধাকে। মেয়েরা আজ শুধু ঘরকন্যা নয়; বাইরের পৃথিবীও জয় করেছে তারা। এরকমই এক উদ্যমী মেয়ের নাম শ্যামনগর উপজেলার আটুলিয়া ইউনিয়নের বিড়ালাক্ষীর শিরিন সীমা। আজ তিনি সমাজ ও পরিবারের মানুষের মন জয় করার পাশাপাশি তাদের ভালোবাসাও আদায় করেছেন।
১৯ বছরের এই তরুণী একজন স্বেচ্ছাসেবক। অকাতরে বিলিয়ে দিচ্ছেন নিজেকে অন্যর উপকারে। ছোট থেকেই চঞ্চল তরুণী স্বপ্ন দেখতন মানুষের সেবা করার, মানবিক কাজ করার। ছোট থেকে তিনি শুধু লেখাপড়া করেননি, লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন খেলাধুলা করে অর্জন করেছেন অনেক পুরস্কার। বয়স এবং সময়ের সাথে সাথে হয়ে উঠেন মানবিক কর্মী। নাম লেখান স্বেচ্ছাসেবকের খাতায়। সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের নিয়েও কাজ করছেন আজ। বিপদে তিনি কখনো ঘরে বসে থাকেননি আর থাকবেনও না বলে জানান তিনি।
শিরিন সীমা শুধু সাধারণ মানুষের ভালবাসা জয় করেছেন তা নয়; জয় করেছেন শিশুদের অফুরন্ত ভালোবাসা। মহামারী করোনার সময়ে যখন সব প্রাইমারি স্কুল বন্ধ, তখন তিনি গ্রামের শিশুদের নিয়ে শুরু করেন শিক্ষা কাজ। মানবতার শিক্ষিকা হিসেবে তিনি চালু করলন মানবতার পাঠশালা। যেখানে বিনা পয়সায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিশুদের পড়ান। শুধু তাই না সমাজের পিছিয়ে পড়া ও বেকার নারীদের নিয়ে চালু করেছেন আল্পনা সেন্টার, যেখানে হাতের কাজসহ ডিজাইনের কাজ করা হয় এবং শেখানো হয়।
এই প্রসঙ্গে শিরিন সীমা বলেন, ‘আমি করোনাকালীন সময় বা যেকোন দুর্যোগের সময় কোনদিন ঘরে বসে থাকিনি, নিজের সাধ্যমত মানুষের সাহায্য করে এসেছি এবং এখনও করছি। আমি গর্বিত আমি একজন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে।’ তাঁর ভালোবাসা পেয়ে এখন গ্রামের অনেক তরুণী তার সাথেই কাজ করে, সাহায্যে করছে স্বেচ্ছাসেবী হয়ে।