বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষায় কিশোরীদের বসন্তবরণ

মানিকগঞ্জ থেকে রাশেদা আক্তার

‘দক্ষিণ হাওয়া, জাগো জাগো-জাগাও আমার সুপ্ত এ প্রাণ’-গানের মধ্য দিয়ে ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে নিল কিশোরীরা। বারসিক’র সহযোগিতায় গতকাল মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পূর্ব মকিমপুর গ্রামের একতা কিশোরী সংগঠন বসন্তবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

একতা কিশোরী সংগঠনের সভাপতি সামিয়া আক্তারের সভাপতিত্বে সকলের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা, গানের খেলা ও নাচ অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার শুরুতেই ঋতুরাজ বসন্ত নিয়ে আলোচনা করা হয়। কিশোরী ইয়াসমিন বলে, ‘ফাল্গুন মাসের ১ তারিখ যে বসন্ত উৎসব করা হয় আমি তো তাই জানতাম না। সব সময় দেখি এই দিনে ভালোবাসা দিবস পালন করে সবাই। বসন্ত আমাদের ঋতুরাজ। এই বসন্তবরণ অনুষ্ঠানে আসতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। আমাদের গ্রামে এই ধরণের আয়োজন এই প্রথম।’

কিশোরী অঞ্জনা আক্তার বলে, ‘আমরা কিশোরীরা মিলে এই বসন্তবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। এখানে আমরা বসন্তের গানে নাচ দেখলাম, সবাই মিলে আনন্দ করলাম। বসন্তকালে আমাদের গ্রামে নানা ধরণের ফুল ফোটে। দেখতে অনেক সুন্দর লাগে।’ সামিয়া আক্তার বলে, ‘আমরা ৪ মাস ধরে এই সংগঠন করেছি। আমরা কিশোরীরা কোনো কাজ করতে চাইলে বাড়ির সবাই শুধু না না করে। আমাদের কোথাও যেতে দিতে চায়না। আমরা সংগঠনের আয়োজনে এই বসন্তবরণ উৎসবের আয়োজন করেছি। সবাই মিলে খুব আনন্দ করলো। আমরা সবাই মিলে অনেক মজা করলাম এটা ভালো লেগেছে। বসন্তকালে চারপাশে অনেক পাখির ডাক শুনতে পাই যা অন্য সময় এতটা ডাকে না। বারসিককে ধন্যবাদ আমাদের সাথে থাকার জন্য। তা না হলে আমরা এই ধরণের অনুষ্ঠানের কথা জানতেই পারতাম না।’

ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে প্রকৃতি সাজে এক নতুন রূপে। নানা রকম ফুল ফোটে, পাখির কলকাকলীতে চারিদিক মুখরিত হয়ে উঠে। মন গেয়ে উঠে তার আপন মনে। কিশোরীরা তাদের আলোচনায় বসন্ত, বৈচিত্র্য ও আন্ত:নির্ভরশীলতা তুলে ধরে। ফাগুনের মোহনায় গানের সাথে নৃত্য পরিবেশন করে সামিয়া আক্তার। আলোচনা ও গান শেষে কিশোরীদের কলা পাতায় করে খিচুরী খাওয়ার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

happy wheels 2

Comments