অচাষকৃত উদ্ভিদগুলো সংরক্ষণ করা জরুরি
সিংগাইর মানিকগঞ্জ থেকে শাহীনুর রহমান
বাড়ির আশেপাশে পতিত ও পালানি জমিতে আপন মনেই বেড়ে উঠে নানা ধরনের বৈচিত্র্যময় উদ্ভিদ। এসকল উদ্ভিদের রয়েছে বহুমূখী ওষুধি ও পুষ্টিগুণ। যারা চিনেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ এই উদ্ভিদগুলোকে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে প্রাকৃতিক ওষুধ ও নিরাপদ খাবার হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। অনেকেই আবার এই উদ্ভিদগুলোর ব্যবহার অভ্যাসে পরিণত করে সংরক্ষণও করে থাকেন। কিন্তু প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠা এই উদ্ভিদগুলোর প্রাকৃতিক উৎস দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2023/06/IMG_20230618_155326-1024x473.jpg)
তাই এ সকল উদ্ভিদ চিহ্নিতকরণ, ব্যবহার , বিকাশ ও প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণে গ্রাম পর্যায়ে কৃষক কৃষাণিদের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে নিরাপদ খাদ্যের প্রাকৃতিক উৎস সংরক্ষণ করি স্লোগানের আলোকে সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের খোলাপাড়া গ্রামে অচাষকৃত উদ্ভিদের পাড়া মেলার আয়োজনে সহায়তা বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা সংস্থা বারসিক।
বারসিক কর্মকর্তা শাহীনুর রহমানের সঞ্চালনায় গ্রামে প্রবীণ নারী রাবেয়া বেগমের সভাপতিত্বে অচাষকৃত উদ্ভিদের গুনাগুণ ও পরিচিতিকরণ বিষয়ে আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন সাবেক ইউপি নারী সদস্য সুফিয়া বেগম, শীমা বেগম, লাইলী বেগম, কৃষক লূৎফর রহমান, শিক্ষার্থী লতিফা আক্তার। আলোচনার পূর্বে পাড়ামেলায় গ্রামের ২৫ জন নারী ডন্ডকল, মদন, পিপুল, ঢেকি শাক, কলমি শাক, কচু, টাকা খারখুন, কাটা নটে, দূর্বা, পাথরকুচি, তিতবেগুন, কানাই লতা, সেচি, হেলেঞ্চা, চিনিগুড়া, ভেরেন্ডা, নুনকুইটা, বউটুনি, ওলট কমল, কালাকচুসহ ২১ ধরনের অচাষকৃত উদ্ভিদ প্রদর্শন করেন।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2023/06/IMG_20230618_155436-1024x473.jpg)
এসব উদ্ভিদ চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে গুনাগুণ তুলে ধরে কৃষাণি রোবেয়া বেগম বলেন, ‘বাড়ির আশে পাশে যে সকল উদ্ভিদ জন্মায় কোন উদ্ভিদই আগাছা নয়। সকল উদ্ভিদেরই আলাদা আলাদা গুনাগুণ রয়েছে। এই উদ্ভিদগুলো নিরাপদ খাদ্য ও ওষুধ হিসেবে আমরা ব্যবহার করি। কিন্তু এই উদ্ভিদগুলো এখন আর আগের মত পাওয়া যায় না।’ সীমা বেগম বলেন, ‘দন্ডকলস এর পাতা রস করে মধু দিয়ে মিশিয়ে খেলে ঠান্ডা ভালো হয় এবং তেলাকুচ পাতা রস করে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। যদি আমরা প্রাকৃতিক এই উদ্ভিদগুলো নিয়মিত ব্যবহার করি তাহলে রোগ নিরাময়ে ডাক্তার নির্ভরতা কমে যাবে।’ সাবেক ইউপি সদস্য সুফিয়া বেগম বলেন, ‘প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠা এই অচাষকৃত উদ্ভিদগুলো সংরক্ষণ করা জরুরি।অচাষকৃত উদ্ভিদগুলো ব্যবহারে মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে। তাহলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হবে।’