‘কৃষ্ণকলি’ এখন দুলালের ক্ষেতের শোভা!
অসীম কুমার সরকার, তানোর (রাজশাহী) থেকে
‘কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি/কালো তারে বলে গাঁয়ের লোক, দেখেছিলাম মেঘলা দিনে, কালো মেয়ের কালো হরিণ চোখ।’ হ্যাঁ, বলছি বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই বিখ্যাত কবিতা ‘কৃষ্ণকলি’র কথা। কিন্তু ‘কৃষ্ণকলি’ ধান! অনেকেই হয়তো নামটি শুনে আঁতকে উঠতে পারেন। কিন্তু এই ‘কৃষ্ণকলি’ কালো ধানটি এখন শোভাবর্ধন করছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মুকিত দুলালের ক্ষেতে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে তানোর উপজেলার দুবইল গ্রামের বরেন্দ্র বীজ ব্যাংক থেকে ধানটি সংগ্রহ করেন মুকিত দুলাল। বীজ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও জাতীয় পরিবেশ পদক প্রাপ্ত কৃষক মো. ইউসুফ আলী মোল্লা জানান, সরু-সুগন্ধি ধান ‘কৃষ্ণকলি’। এটি অতি পুরাতন জাতের ধান। ধানটি কালো। ধানের চালও কালো। তাঁর বীজ সংগ্রহশালা থেকে মুকিত দুলাল এক কেজি বীজ ধান নিয়ে যান। ধান উঠে গেলে আবার এক কেজি বীজ ধান দিয়ে যাবেন। তাঁর বীজ সংগ্রহশালায় পুরাতন দিনের প্রায় ৩০০ জাতের ধান রয়েছে বলে জানান এই কৃষক।
এ নিয়ে ‘কৃষ্ণকলি’ ধান চাষি মুকিত দুলাল বলেন, ‘ইউসুফ মোল্লার কাছ থেকে আমি পুরাতন দিনের বিভিন্ন জাতের ধান দেখে মুগ্ধ হয়েছি। সরু-সুগন্ধি কালো বর্ণের ‘কৃষ্ণকলি এবার ১০ শতাংশ জমিতে চাষ করেছি। কয়েকদিনের মধ্যে ধান কাটা হবে। ৫ থেকে ৬ মণ ফলন হতে পারে। তা দিয়ে আগামী বছর কয়েক বিঘা জমিতে এই ধান চাষ করবো। ইতিমধ্যে অনেক কৃষক আমার এই ধান দেখে চাষ করতে আগ্রহী হয়েছেন। তারাও আগামীতে এই ধান করবে বলে জানিয়েছেন।’
এ বিষয়ে বে-সরকারি গবেষণা উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান বারসিক কর্মসূচী কর্মকর্তা অমৃত সরকার জানান, পরিবেশবান্ধব কৃষ্ণকলি ধান খরা সঞ্চিষ্ণু, অল্প পানিতে চাষ করা যায়। এটি কালো ধান ও চাল হওয়ায় দেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বরেন্দ্র অঞ্চলে পুরানো দিনের এই সমস্ত চাষে ইতিমধ্যে অনেক কৃষক বরেন্দ্র বীজ ব্যাংক থেকে ধান সংগ্রহ করছেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।