ধলেশ্বরী নদী অবৈধ দখল ও ধূষণ মুক্তসহ খননের দাবী
মানিকগঞ্জ থেকে রাশেদা আক্তার
“Beat plastic pollution” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে ধলেশ্বরী নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটি মানিকগঞ্জ ও বারসিক এর যৌথ আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ধলেশ্বরী নদী রক্ষা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনায় বক্তারা ধলেশ্বরীসহ মানিকগঞ্জের অন্যান্য নদী অবৈধ দখল ও দূষণমুক্ত করার দাবী তুলে ধরেন। নদীর বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে ধলেশ্বরী নদীর উৎস মুখ তিল্লির মুখ খননের দাবী জানান।
ধলেশ্বরী নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটি, মানিকগঞ্জ এর আহবায়ক এ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম আরজু বলেন, “ধলেশ্বরী নদী খননের দাবী বিভিন্ন সভা, সমাবেশ, মানববন্ধন, স্বারকলিপি প্রধান করেছি যার প্রেক্ষিতে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান তিল্লির উৎস মূখ সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন, নদীর সীমানা নির্ধারনের জন্য জরিপ করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা কোন ফলাফল পাইনি।” বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায় বলেন, “বিভিন্ন সভা, সেমিনার, পোষ্টার, বিল বোর্ড, লিফলেটের মাধ্যমে প্রচার করার ফলে জনগনের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি অতিসত্ত্বর ধলেশ্বরী নদী খননের কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য।” এ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ বলেন, “মানিকগঞ্জের অনেক নদী যে নদীগুলোর এখন আর কোন অস্তিত্ব নেই। আর এখন যে নদী গুলো আছে তা কারখানার বর্জ্য পদার্থে দূষিত এবং দখল হচ্ছে।” তিনি এই মতবিনিময় সভার মাধ্যমে মানিকগঞ্জ জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ধলেশ্বরী, কালীগঙ্গা, গাজীখালি নদী রক্ষার দাবী জানান। প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব চক্রবর্তী বলেন, “তিল্লি মুখ খননের জন্য সরকারি বাজেটের তেমন কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না, স্থানীয় চেয়ারম্যান, জনগণ ও মাটি ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত করে কাজটি করা যোতে পারে।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মানিকগঞ্জের জেলা প্রাশসক জনাব মো. নাজমুছ সাদাত সেলিম বলেন, “আপনাদের এই আন্দোলনে সাথে আছি; আপনারা স্থানীয় চেয়ারম্যান ও জনসাধারণকে ধলেশ্বরী নদী রক্ষা বিষয়ে সচেতন করার মধ্য দিয়ে জনমত গড়ে তুলুন। আমি আপনাদের পাশে থাকবো। তাছাড়া আগামী ২৬ জুন ২০১৮ ইং তারিখে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান এখানে আসবেন আপনারা সেই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থেকে এ সমস্যা গুলো তুলে ধরেন। তারপর সবাই মিলে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। সেই সাথে মানিকগঞ্জ শহরের খাল খনন ও দুই পাশের পরিবেশ সুন্দর করার জন্য ইতোমধ্যে ঢাকায় আলোচনা করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই এটি সংস্কারের জন্য টাকা আসবে। টাকা আসলেই এটি সংস্কারের কাজ শুরু হবে।”
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. বাবুল মিয়া, মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু, মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব চক্রবর্তী, ধলেশ্বরী নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম আরজু, সদস্য সচিব আব্দুল হামিদ, স্যাকের সভাপতি এ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ, পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পচিালক, প্রথম আলোর মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি আব্দুল মোমিন, ডেইলী স্টার মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি মো. জাহাঙ্গীর আলম, সমাজকর্মী ইকবাল খান এবং ধলেশ্বরী নদী পাড়ের (জাগীর ও বায়রা ইউনিয়নের) কৃষক-কৃষাণি।