পশু পাখির আবাসস্থল ও খাদ্য তৈরি হবে
হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে মুকতার হোসেন
সোহান, রনি, বাদল, আশা, ময়ুরী, রিমি, নদী, রাজু আরও অনেকে সকলে সবাই তৃতীয় শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত। সবার হাতে হাতে ছিল খেজুর বীজ। তারা হৈ চৈ আর আনন্দের সাথে সেই খেজুরের বীজ হরিরামপুর উপজেলার চরাঞ্চল হরিহরদিয়া গ্রামের রাস্তার দুই পাশ দিয়ে খেজুর বীজ বপন করছে। তাদের এই উদ্যোগের সাথে শামিল হয়েছেন কিশোর-কিশোরী যুব সমাজ, স্বেচ্ছা-সেবকটিমের সদস্য, কৃষক, ইউপি সদস্য, শিক্ষকবৃন্দ। তারা লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের হরিহরদিয়া নতুন হাট থেকে বালিয়াচর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের বাড়ি পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশ দিয়ে খেজুর বীজ বপন করেছে সম্প্রতি।
বৈশ্বিকভাবে জলবায়ু পরবর্তন হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে কৃষি তথা মানুষের সার্বিক জীবনযাত্রা ও পরিবেশের উপর। পরিবেশ, মানুষ ও জলবায়ু অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে আন্তঃসম্পর্কযুক্ত। কৃষির সাথেও পরিবেশ, আবহাওয়া ও জলবাযু সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা খেজুর বীজ বপন অত্যন্ত যুগপোযোগি একটি কাজ বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
এই প্রসঙ্গে হরিহরদিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য সেকেন্দার আলী বলেন, ‘চরাঞ্চলে তরুণ, কিশোর, শিক্ষার্থীরা রাস্তার পাশ দিয়ে খেজুর বীজ বপন করেছে। এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। চরে খেজুর গাছ কম দেখা যায়, আজকে খেজুর বীজ বপনের মধ্যে চরে খেজুর গাছ বৃদ্ধি পাবে। পরিবেশ ভালো থাকবে। আমরা এক সময় এ গাছ বড় হলে রস খেতে পারব। পশু পাখির আবাসস্থল ও খাদ্য তৈরি হবে।’ তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বলেন, ‘তোমরা যখন বড় হবে সবার কাছে বলতে পারবে যে এই রাস্তার খেজুর গাছগুলো আমরা লাগিয়েছিলাম। পরিবেশ রক্ষায় তোমরা অনেক বড় ভূমিকা রাখছো।’
হরিহরদিয়া স্বেচ্ছা-সেবকটিমের সভাপতি রাসেল মিয়া বলেন, ‘চরাঞ্চলে আমরা পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম করে যাচ্ছি। তার মধ্যে খেজুর বীজ বপন, তালবীজ, বটগাছ, পাইকর গাছসহ বিভিন্ন ধরনের ফলজ, বনজ ও ঔষুধি বৃক্ষ রোপণ করে আসছি। এলাকার মানুষকে পরিবেশবান্ধব কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করতে এই কাজ করে আসছি। তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, খাদ্য বৈচিত্র্য, পাখি রক্ষ, সরকারি আইনী সহায়তায় বিলবোর্ড দিয়ে প্রচারণামূলক কার্যক্রম করে যাচ্ছি। বারসিক আমাদেরকে সাথে সহযোগি হিসেবে কাজ করছে।’
বারসিক কর্মকর্তা মোঃ মুকতার হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় জনগোষ্ঠির সহায়তায় হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ রাস্তার পাশে খেজুর বীজসহ মৌসুমভিত্তিক ফলজ, বনজ ও ঔষুধি বৃক্ষ রোপণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’