হিজল বৃক্ষ সুরক্ষায় রতন মিয়া
কলমাকান্দা, নেত্রকোনা থেকে খায়রুল ইসলাম অপু
হিজল হাওরঅঞ্চলরে একটি গুরুত্বর্পূণ বৃক্ষ। হাওররে পাড়, নদীর তীর, বসতভতিরে মাটি ক্ষয়রোধ, মাছরে খাবার হিসেবে হিজলের যথষ্টে ভূমকিা রয়ছে। এটি একটি পানি সহনশীল গাছ। পানিতে র্দীঘদনি টিকে থাকে বলে হাওররে জনগোষ্ঠী এটি এক সময় বেশি পরিমাণে রোপণ করতো। কিন্তু বর্ত মানে আগ্রাসী গাছরে প্রভাবে এই গাছ বলিুপ্তপ্রায়। তার পরও কিছু কিছু উদ্যোগী মানুষ আছেন যারা এখনও হিজল বৃক্ষ বৃক্ষ রোপণ ও সংরক্ষণ করেন । এমনই একজন হিজল সংরক্ষণকারী কৃষক রতন মিয়া।
নেএকোনা জেলা, কলমাকান্দা উপজেলা, কলমাকান্দা সদর ইউনিয়নে ডায়ার কান্দা গ্রামে বাস করেন কৃষক মো. রতন মিয়া । ছোট ভাই ও মাকে নিয়ে তিনজনের ছোট সংসার তার। হিজল গাছ রোপণ ও সংরক্ষণ করা সম্পর্কে রতন মিয়া বলেন, “এই গাছ আমার বাপ দাদার আমল থেকেই ছিল । বাবার কাছ থেকে শুনেছি এই জায়গা বন-জঙ্গল আছিল। বাঘ, হরিণ, বানর, সাপ থাকতো এই জঙ্গলে। মানুষ ভয় পেয়ে আসত না।” ওই বন জঙ্গলে অনেক হিজল গাছ আছিল।”
তিনি জানান, ও্কই সময়ে প্রচুর হিজল গাছ ছিলো। কারণ বনের পরিমাণও বেশি ছিলো। তবে বর্ত মানে মানুষ নানা কারণে বন উজাড় করায় এসব গাছের অস্তিত্ব বিপন্ন। এই হিজল গাছ মাছের খাদ্য ও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতো মানুষ। বিশেষ করে এই গাছের ছাল মাছের প্রধান খাদ্য। এই ডাল পানিতে ডুবে থাকায় এর ছালগুলো মাছ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারতো।
তিনি কখনও হিজল গাছের জঙ্গল উজাড় করেন না। হিজল গাছ মাটির উপরে যতটুকু দেখা যায় এর শিকড় মাটির নিছে তার চেয়েও বেশি যায়। এতে করে প্রচুর পরিমানে পানি পায় । রতন মিয়া বলেন, “আমাদের এই বাড়ির ছড়াগুলোতে এই হিজল গাছ আছে বলেই মহাদেও নদীর ঢল হলেও হলেও ভাঙন কম হয়।” হিজলের গাছে ফুল ধরে বীজ হয়। সেই বীজ মাটিতে পরে প্রাকৃতিকভাবে চারা গজায়। এই গাছ পানির নিচে ৬ মাস থাকলেও মরে না । তবে একটা গাছের পুর্ণাঙ্গ বয়স হতে ১৫ বছর সসময় লেগে যায়। হিজল গাছে কোন পরিচর্যা করতে হয় না। এ গাছের নিচে বসে আরাম করা যায়। কৃষকরা বৈশাখে ধান শুকানোর পর এগাছের নিছে বিশ্রাম করেন। হিজল গাছটি যেমন পানি সহনশীল তেমনি খরা সহনশীল বলে জানান রতম মিয়া ।
রতন মিয়ার মতে, হাওর এলাকায় নদী ভাঙন রোধ করার জন্য এ গাছের যত্ন ও সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। তাছাড়া এ গাছের ছাল মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় এটি সংরক্ষণে মাছের খাদ্যের যোগানও নিশ্চিত হবে। তিনি বলেন, “এগাছের গুরুত্ব দুনিয়া যতদিন থাকব ততদিন থাকবো। বিল রক্ষা করতে হলে এবং বিল বা হাওরে মাছ চাইলে হিজল গাছের ডাল লাগব।” তিনি আরও বলেন, এ গাছ সাফ করে দিলে নদী ভাঙন রক্ষা করা কঠিন হইবো। হিজল গাছ না থাকলে নদীতে আমার জমি কাইরা নিব, মানুষ বসত ভিটে হারাইব।”