নতুন মিষ্টি পানির আঁধার তৈরিতে বেড়েছে বোরো ধানের চাষ
সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে গাজী আল ইমরান
মিষ্টি পানির আঁধার তৈরি হওয়ায় বেড়েছে বোরো মৌসুমে ধান চাষ। বংশিপুর কয়ালপাড়ায় অন্যান্য বছর ৬০ থেকে ৭০ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ হলেও এবারের মৌসুমে নতুন করে মিষ্টি পানির আঁধার তৈরি হওয়ায় ১২০ বিঘার অধিক জমিতে ধান চাষ করেছে চাষীরা।
বুধবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিগত বছরগুলোতে যে জায়গাগুলো পতিত অবস্থায় থাকতো ঠিক একই জায়গা এবছর সবুজের সমারোহ। কৃষকদের ভাষ্যমতে, অত্র এলাকায় নতুন নতুন কয়েকটি পুকুর খনন হওয়ায় এবারের বোরো মৌসুমে কৃষকরা ধান রোপণে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। যার ফলে বিলের সমস্ত জমিতে ধান চাষ করেছেন কৃষকরা। সরকারি বেসরকারিভাবে বিভিন্ন দখলকৃত খাল উন্মুক্ত করতে পারলে ধানের চাষ আরো অধিক পরিমাণ বাড়বে বলে জানিয়েছে এলাকার চাষীরা।
এখানকার বয়োজ্যেষ্ঠ কৃষক পরিতোষ মন্ডল বলেন, ‘আমরা অন্য বছর পানির অভাবে বোরোধান চাষ করতে পারতাম না। এবারের মৌসুমে বিলে নতুন পুকুর খনন হওয়ায় কৃষকরা ধান চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া সরকারিভাবে বীজসহ বিভিন্ন পরামর্শ পাওয়ায় কৃষকদের ধান চাষে পাথেয় হয়েছে।’
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমান সময়ে কৃষকদের মাঝে অধিক পরিমাণে বীজসহ বিভিন্ন ধরনের উপকরণ এবং একই সাথে সরকারি বেসরকারিভাবে নতুন নতুন মিষ্টি পানির আঁধার তৈরি হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে চাষে আগ্রহ বেড়েছে। কৃষি অফিস সূত্রে আরো জানা যায়, চলতি বছরে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে প্রায় ২৩ শত হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সঠিক সময়ে চারা লাগানো নিবিড় পরিচর্যা, যথা সময়ে সেচ দেওয়া ও সার সংকট না থাকায় উপজেলায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের ব্যবস্থাপনায় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় রাসায়নিক ও কীটনাশক ব্যবহারে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করছেন মাঠ পর্যায়ে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এনামুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান চাষ হয়েছে। বিগত মৌসুমে ২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোধান চাষ হলেও এবার ২ হাজার ৩ শত হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হচ্ছে। শুরু থেকেই কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদেরকে সঠিক সময়ে চারা লাগানো, নিবিড় পর্যবেক্ষণসহ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে আমার লোকজন কৃষকের সাথে ধান ঠিক রাখার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সকল ধরণের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এবছর বিএডিসিসহ সরকারিম ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কৃষকদের সবজি চাষে উদ্বুধ করতে মিষ্টি পানির জলাশয় খনন ও পুনঃখননের ব্যবস্থা করায় ধান চাষসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ বেড়েছে।’