দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিজের ঘর পাকা করতে চান উষা রানীর
সাতক্ষীরা থেকে আব্দুল আলীম
উষা রানী নিজের পরিশ্রমে গড়ে তুলেছেন একটি দেশীয় প্রজাতির ছাগলের খামার। ২টি ছাগল থেকে একপাল ছাগলের খামার তৈরি করেছেন তিনি। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাতক্ষীরার উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের মীরগাং গ্রামে বাস করেন তার পরিবার। স্বামী পরিত্যাক্তা উষা রানী নিজের ছেলে ও বৌমার সংসারে বাস করেন। ৪ সদস্যের ছোট সংসার তাদের।
২০২১ সালে অক্টোবর মাসে নেটজ পার্টনারশিপ ফর ডেভেলপমেন্ট জাস্টিস’র সহযোগিতায় বারসিক’র বাস্তবায়নে পরিবেশ প্রকল্প শুরু হলে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের মীরগাং গ্রামে সুন্দরী সিএসও দলে যুক্ত হয় উষা রানী। যুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি নিয়মিতভাবে সাপ্তাহিক দলীয় আলোচনায় সভায় অংশগ্রহণ করেন। দলে যুক্ত হওয়ার কিছুদিন পরে বারসিক পরিবেশ প্রকল্প থেকে তার পারিবারিক ও ব্যবসায়িক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। যার প্রেক্ষিতে উৎপাদনশীল সম্পদ হিসেবে তাকে দেশীয় জাতের ২টি মা ছাগল সহযোগিতা করা হয়। ২টি মা ছাগল যতœসহকারে পালন করেন তিনি। সুন্দরবনের লতাপাতা, ঘাস ও ধানচে সংগ্রহ করে রীতিমত একটি ছোট খামারে পরিণত করেছেন। তার খামার থেকে ৪টি ছাগল বিক্রি করে ছেলের জন্য মাছ কাকড়া ধরার একটি নৌকা কিনে দিয়ে বাকি টাকা সংসারের কাজে ব্যয় করেছেন।
ছাগল লালন পালন ও দেখাশুনা রোগ ব্যাধি ও নিয়মিত ভ্যাকসিনসহ নানা ধরনের পরিচর্যার মাধ্যমে তিনি প্রাণীসম্পদ প্রতিপালনে অবদান রাখছেন। বর্তমানে তিনি ১০টি ছাগলের মালিক। তার ছেলে সুন্দরবনের নদীতে মাছ-কাকড়া ধরে আয় করেন। প্রাণীসম্পদ পালনের পাশাপাশি উষা রাণী তার নিজের ৮ শতক বসতিভিটায় মৌসুমভিত্তিক বৈচিত্র্যময় কৃষি ফসল চাষাবাদ করে সংসারের আংশিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করেন। তিনি চান তার ছাগল পালনের মাধ্যমে আয় বাড়িয়ে নিজেদের বসতঘরটাকে পাকা করবেন যাতে করে দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাবেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের ঘাত প্রতিঘাতে সংগ্রামী উষা রানী তার পরিবারকে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য দেশীয় প্রজাতির ছাগলের খামার তৈরী করে একদিকে যেমন সমৃদ্ধ হয়েছেন অপরদিকে প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষায় বিশেষ ভুমিকা রাখছেন।