স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে পরিবেশবান্ধব চুলা ব্যবহার করি
শ্যামনগর, সাতক্ষীরা থেকে বিশ্বজিৎ মন্ডল
সম্প্রতি বারসিক’র সহায়াতা ও জয়নগর কৃষি নারী সংগঠনের উদ্যোগে শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের কৃষাণী রোজিনা বেগমের বাড়িতে পরিবেশবান্ধব চুলা তৈরি ও ব্যবহার বিষয়ে একটি ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রশিক্ষণে জয়নগর, গোবিন্দপুর গ্রামের ১৯ জন নারী হাতে কলমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণে সহায়কের দায়িত্ব পালন করেন জয়নগর কৃষি নারী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রোজিনা বেগম।
প্রশিক্ষক রোজিনা বেগম জানান, ‘এই চুলা স্বাস্থ্যসম্মত। এটি আমাদের পরিবেশের জন্য খুবই উপযোগী। এই চুলায় নানান গুণাবলী আছে। এতে যেমন ঘর বাড়িতে কোন কালি হবে না, হাড়ি পাতিলেও কালি পড়বেনা, ঘরের মধ্যে কোন ধোঁয়া থাকবেনা, তাপ কম লাগবে। যেকোন জ্বালানি দিয়ে জ্বালানো যাবে। এ চুলা তৈরি করাও খুব সহজ। একবার যে কেউ তৈরি করা দেখলে সে এই চুলা তৈরি করতে পারবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি আগে সাধারণ চুলা ব্যবহার করতাম। সেখানে কিন্তু নানান ধরনের সমস্যা হতো। আমার একটু এলার্জির সমস্যা আছে। সাধারণ চুলায় রান্না করলে হাঁচি এবং কাশি বেশি লাগতো, মাথা ঘুরতো, তাপ লেগে হাত ও মাঝে মধ্যে পুড়ে যেতো, ঘরের মধ্যে কালো হয়ে যেতো। যেদিন থেকে পরিবেশবান্ধব চুলার গুণাবলী সম্পর্কে জানতে পেরেছি সেদিন থেকে এই চুলা ব্যবহার করি। আমরা স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে পরিবেশবান্ধব চুলা ব্যবহার করি।’
প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী কৃষাণী সুমা, শোভা রানী, মর্জিনারা জানান, ‘আমরা এখন প্রায় বাড়িতে পরিবেশবান্ধব চুলা ব্যবহার করি। এখান থেকে বছর চারেক আগে কিন্তু এই চুলার ব্যবহার কম ছিলো। ২০১৮ সালের দিকে আমরা বারসিক’র মাধ্যমে চুলা তৈরির একটি প্রশিক্ষণ পাই। সেখানে আমাদের গ্রামে অনেকে ব্যবহার করছেন। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কম বেশি চুলা সহায়তা করছে। সেই সময় বারসিক থেকে কয়েকজন চুলার উপকরণ সহায়তা পেয়েছিলো।’
তারা আরও জানান, বিগত সময়ে আমরা বারসিক’র নিকট পুনরায় চুলা তৈরির একটি প্রশিক্ষণ ও উপকরণ সহায়তা চেয়েছিলাম। সে অনুযায়ী আজ এ প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণের সাথে সাথে আমাদের ১০টি পরিবারের মাঝে চুলার উপকরণ সহায়তা করেছে। আমরা যেমন প্রশিক্ষণ পাইলাম সাথে সাথে উপকরণও পেলাম। আমি নিজে এ চুলা তৈরি করে ব্যবহার করবো। আমরা সবাই যদি পরিবেশবান্ধব চুলা ব্যবহার করি তাহলে তা কিন্তু আমাদের পরিবেশের জন্য খুবই ভালো হবে।’