শিক্ষায় সুনাম অর্জন করছে মনিঋষি শিক্ষা কেন্দ্র
সত্যরঞ্জন সাহা, হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ
‘আমরা দলিত মনিঋষি এই বাংলা দেশের মানুষ হলেও অন্য সমাজ ও গোষ্ঠীর মানুষের চেয়ে আমরা পিছিয়ে আছি। আমাদেরকে সমাজ ও দেশের মানুষ প্রান্তি জনগোষ্ঠী হিসাবে চিনে ও জানে। আমরা সবার সাথে একই ¯্রােতধারাই এগিয়ে যেতে চাই। আমাদের ছেলে মেয়েদেরকে আধুনিক শিক্ষার সুযোগ করে দিতে চাই। আমাদের সন্তাদের আনন্দ ফূর্তিতে মেধা বিকাশে উঁচু স্থানে নিয়ে যেতে চাই। এটা আমাদের স্বপ্ন ছিল, স্বপ্ন আমাদের পূরণ হচ্ছে। আমরা প্রাথমিকভাবে সুনামের সাথে শুরু করতে পেরেছি। আমরা প্রান্তিক জনগোষ্ঠী হলেও আমাদের তৈরিকৃর্ত স্কুলে লেখাপড়া করছে আমাদের ছেলে মেয়েরা। আমরা এই সুন্দর কাজটি করতে পেরেছি বারসিক আমাদের সাথে থাকার কারণে ও সহযোগিতার কারণে।’ উপরোক্ত কথাগুলো বলেছেন কালই হরিরামপুর মনিঋষি শিক্ষা কেন্দ্রের সভাপতি নিত্যমনি সরকার।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2023/12/3.jpg)
কালই মনিঋষি শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষক এসোনা মনিদাস জানান, মনিঋষিদের শিক্ষা স্বপ্ন পূরণের জন্য সরকারি ও বেসরকারি সেবা প্রাপ্তিতে যোগাযোগ ও উদ্যোগ গ্রহণ করছেন অভিভাবক ও মনিঋষি স্কুল পরিচালনা কমিটি সদস্যগণ। দলিত মনিঋষিগণ নিজেদের জীবনমান উন্নয়নে শিক্ষা, স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন। তাঁরা শিক্ষা কেন্দ্র করে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে পারায় তাদের উন্নয়নে পথ প্রশস্ত হয়েছে। বর্তমানে তাদের সাথে স্থানীয় সরকার ও সরকারি বেসরকারি অফিসের লোকজন যোগাযোগ করে সেবা সহযোগিতা দিয়ে উন্নয়নে সহযোগিতা করছেন। তাছাড়াও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন উন্নয়ন সহায়তা ২০১৬ সালে “কালই মনিঋষি শিক্ষা স্বাস্থ্য কেন্দ্র (প্রি-প্রাথমিক)” বরাদ্দকৃত অনুদান শিক্ষা বৃত্তি দুই লাখ ষাট হাজার টাকা পায়। উক্ত বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে শিক্ষা বৃত্তি ও শিক্ষকের বেতন ও স্কুল ঘর তৈরি করার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2023/12/85193943_567209494142255_5670144501952282624_n.jpg)
মানিকগঞ্জ সদর হাটিপাড়া পাওনান মনিঋষি শিক্ষা কেন্দ্রের সভাপতি ময়ারাম মনিদাস বলেন, ‘আমরা মনিঋষিগণ পিছিয়ে পড়ে ছিলাম। আমাদের ছোট ছেলেমেয়ে প্রাথমিকভাবে হাতেকলমে শিক্ষা শুরু করতে না পারায়। কারণ পরিবারের লোকজন কেউ অক্ষর জানেন না। ফলে ছেলে মেয়েদের পাশে বসে যে শিক্ষা দেওয়া দরকার তা দিতে পারে না। যার কারণে দলিত মনিঋষি পরিবারের ছেলেমেয়েরা ভালোমত লেখাপড়া করতে পারেনি। সরকারি বেসরকাি ওর অফিসের সাথে যোগাযোগের সুযোগ হয় না। ফলে দারিদ্রতা বাড়তে থাকে ও সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘তবে বারসিক’র সহযোগিতায় সকল মনিঋষিরা ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিতে পারায় ছোট ছেলে মেয়েদের জন্য জনউদ্যোগে শিশু বিকাশ কেন্দ্র করে শিক্ষা দিতে পারায় আমাদের সবচেয়ে বড় সফলতা। স্কুলটি মন্দিরভিক্তি শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে যুক্ত করে দেওয়া হয়। ফলে সরকারি বেতনে শিক্ষক ও স্কুলের শিক্ষার্থীগণ বই খাতা কল সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে। মনিঋষি স্কুল কমিটি ও অভিভাবকগণ সম্মিলিতভাবে স্কুল পরিচালনার পাশাপাশি দলিতদের অধিকার আদায়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’