রাজশাহীর হাদির মোড়ে বধ্যভূমি বাস্তবায়নের আশ্বাস জেলা প্রশাসকের
রাজশাহী থেকে মো. জাহিদ আলী
মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্মৃতি বিজড়িত স্থান রাজশাহী হাদির মোড়। এই মোড়ে বাঁধের নিচে মুক্তিযুদ্ধের সময় শত শত মানুষের লাশ ফেলা হয়। হাদির মোড় বধ্যভূমি বাস্তবায়ন পরিষদ ও বারসিক গত ২৫ মার্চ কাল রাত্রি হিসেবে সোমবার শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক এস এম আব্দুর কাদের। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠন এ্যাডভোকেট আব্দুর হাদী।
আলোচনায় জেলা প্রশাসক এস এম আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমার বাবাও একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের অনেক গল্প বাবার কাছে থেকে শুনেছি। হাদির মোড়ের এই গণকবরটি বধ্যভূমিতে বাস্তবায়নে আমার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘মুক্তি যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এ এইচ এম কামারুজ্জামান এর সুযোগ্য পুত্র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন মেয়র হিসেবে আছে। উনার সাথে আলোচনা সাপেক্ষে এই গণকবরটি বধ্যভূমিটি বাস্তবায়নে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এর প্রথম মেয়র এ্যাডভোকেট আব্দুল হাদী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি এই এলাকার এমপি ছিলাম বিধায় আমার উপর হানাদার বাহিনীর রোষাণল বেশি ছিল। তারা আমার পরিবার আক্রমণ করে এতে আমার ভাই আব্দুল হক শহীদ হন। এই গণকবরে এন এলাকার কয়েকশত মানুষের লাশ রয়েছে। এটি বধ্যভূমিতে বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।’
মুক্তি যোদ্ধা আরশেদ আলী বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এই হাদির মোড় তৎকালীন ১নং ওয়ার্ড রামন্দ্রপুর ও রানীনগর এলাকায় হানাদার বাহিনীর লাশ ফেলার অন্যতম স্থান ছিল। শত শত মানুষকে বিভিন্ন জায়গায় হত্যার পর এইখানে ফেলে রাখতো। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি এই গণকরবকে বধ্যভূমিতে স্বীকৃতি দেয়া হোক।’
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিরা অস্থায়ী বধ্যভুমি প্রাঙ্গনে মোমাতি প্রজ্বলন করে এবং প্রাধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রামাণ্য চিত্রটির উদ্ধোধন করেন। বধ্যভুমি বাস্তবায়ন পরিষদের প্রচার সম্পাদক জাহিদ আলী সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানের অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আলমগীর কবির, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রাজশাহী মহানগর ডা. আব্দুল মান্নান, মুক্তিযোদ্ধা বরজাহান আলী, মুক্তিযোদ্ধা আরশেদ আলী, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক কাজী মঞ্জুর হোসেনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।