সংরক্ষিত হোক মুক্তিযুদ্ধের সকল বধ্যভুমি

সাতক্ষীরা থেকে গাজী আসাদুল ইসলাম

????????????????

“সাতক্ষীরায় খান সেনারা আসার পর সাতক্ষীরার প্রায় ৯৬ গ্রাম খেকে বহু মানুষ এই রাস্তা দিয়ে ভারতের বর্ডার ক্রস করার জন্য আসা-যাওয়া করতো। আর শহরের এই বালক উচ্চ বিদ্যালয়টিতে শেল্টার নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে বর্ডার ক্রস করতো। কিন্তু একদিন খান সেনারা শহরে প্রবেশ করার সময় জানতে পারে এই স্কুলে সংখ্যালঘু পরিবারসহ সাত-আটশত লোক এখানে আছে। তারপর খানসেনারা এসে তাদের আটক করে স্কুলের আশপাশের বাড়ি থেকে দা, কোদাল, শাবল দিয়ে স্কুলের পেছনের এই জায়গাটিতে গর্ত করে সবাই কে ধরে এনে গুলি খরচ না করে বেয়নেট, দা, বটি, খোন্তা, কোদাল দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে নির্মমভাবে খান সেনা এবং তাদের দোসররা সাত-আটশত নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। দুই-তিন দিন ধরে এই গণকবর থেকে করুণ আত্মচিৎকার করতে থাকে। অনেকে যন্ত্রণায় করুণ আত্মচিৎকার করতে করতে মৃত্যুবরণ করে। এবং পরে এখানেই তাদের গণকবর দেওয়া হয়। আর এই স্কুলটি খানদের টর্চার সেল গঠন করা হয়।” এভাবেই মুক্তিযুদ্ধের সময়কার গণহত্যা করে গণকবর দেওয়া স্থান আমতলা বধ্যভূমির করুণ কাহিনী বর্ণনা করছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারি কমান্ডার মো. কামরুজ্জামান বাবু।

????????????????

আজ ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৭ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে দশটায় সাতক্ষীরা শহরের আমতলা মোড়ে অবস্থিত বধ্যভুমিতে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিম এবং সাতক্ষীরা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড আয়োজিত ‘বিজয়ের মাসে এসো মুক্তিযুদ্ধের গল্পশুনি’ অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধারা তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ঘটনা বর্ণনা করছিলেন। এসময় তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সহকারি কমান্ডার মো. কামরুজ্জামান বাবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার মো. হাসানউজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সদর উপজেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসানুল ইসলাম। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব লাইলা পারভিন সেজুতি এবং মুক্তিযোদ্ধা সন্তান জোসনা আরা, বাবলু, দিবা এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের সাধারন সম্পাদক আসাদুল ইসলাম, সদস্য বাহলুল করিম, নূরুল হুদা, আব্দুর রহিম, মাহিদা মিজান, ফজলুল হক প্রমূখ।

????????????????

বিজয়ের মাসে এসো মুক্তিযুদ্ধের গল্পশুনি উক্ত অনুষ্ঠানে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, সিটি কলেজ, ডে-নাইট কলেজ, পল্লিমঙ্গল স্কুল এ্যান্ড কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থীরা আগ্রহ সহকারে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা শুনে শিহরিত হয়েছিল।

এসময় উপস্থিত সকলে এই অঞ্চলের সব থেকে বড় এই বধ্যভুমিটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সংরক্ষণের দাবি জানায়। পাশাপাশি, তরুণ প্রজন্মসহ উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা বধ্যভূমিতে বধ্যভূমির সাইন বোর্ড স্থাপন করে। সবশেষে তরুণ প্রজন্মের হাতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তুলে দেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

happy wheels 2

Comments