মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ ও কৃষকের স্বার্থে নূরানী গঙ্গা নদী খনন করা হবে

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ ও কৃষকের স্বার্থে নূরানী গঙ্গা নদী খনন করা হবে

সিংগাইর মানিকগঞ্জ থেকে শাহীনুর রহমান
প্রকৃতি, পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র রক্ষায় নুরানী গঙ্গা নদী বাঁচাতে সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়ন কৃষি উন্নয়ন কমিটি বলধারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ার‌্যাম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে নুরানী গঙ্গা নদী খননের দাবি তুলে ধরেছেন সম্প্রতি।
বলধারা ইউনিয় কৃষি উন্নয়ন কমিটির কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল লতিফ ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি উন্নয়ন কমিটির সভাপতি এ কে এম করম আলী মাষ্টার, বাংগালা নব কৃষক কৃষাণি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য নির্বাচিত নারী ইউ, পি সদস্য সেলিনা বলধারা ইউনিয়ন কৃষি উন্নয়ন কমিটির সহ-সভাপতি মোঃ হযরত আলী, সদস্য মোঃ দারোগ আলী শিকদার, মোঃ মেছের আলী সুভাষ মন্ডল, যুব সদস্য মোঃ জুনায়েদ জিয়া, দ্বিপা আক্তার, বারসিক কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান ও শারমিন আক্তার এর উপস্থিতিতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।


এই প্রসঙ্গে বলধারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তি যোদ্ধা হাজী আব্দুল মাজেদ খান বলেন, ‘নরুানী গঙ্গা নদীটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত নদী। এ নদীতে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ৮১ জন পাকিস্তানী সেনা নিহত হয়। তাছাড়া কৃষি ও কৃষক হচ্ছে এই অঞ্চলের প্রাণ। কৃষিকে কেন্দ্র করে এই অঞ্চলে জীবন ও জীবিকা গড়ে উঠেছে। প্রাণ প্রকৃতি পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য, কৃষি ও কৃষক রক্ষায় নদীটি খনন করা প্রয়োজন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ ও কৃষকের স্বার্থে নূরানী গঙ্গা নদী খনন করা হবে।’
জেলা কৃষি উন্নয়ন কমিটির সভাপতি করম এ কে এম করম আলী মাষ্টার বলেন, ‘নদী, নালা, খাল বিল দেশের পরিবেশ, প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য বাঁচিয়ে রাখে। প্রবাহমান নদী থেকে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে নানা পেশাজীবী মানুষ। কিন্তু প্রতিনিয়ত দখল ও দূষণের কারণে নদী সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে নষ্ট হচ্ছে পানি। কমে যাচ্ছে পানির ভেতরে অক্সিজেনের মাত্রা। বর্ষা মৌসুমে উপরে পানি দেখা গেলেও তলদেশে নদীরই নাব্যতা কমছে আশঙ্কাজনকভাবে। নদীটি খনন করা হলে কৃষিকাজে কৃষককে প্রকৃতি নির্ভর সেচ ব্যবস্থা তৈরি হবে।’


বলধারা ইউনিয়ন কৃষি উন্নয়ন কমিটির সভাপতি আব্দুল লতিফ বলেন, ‘মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা মিতরা, পুটাইল, সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের উপর দিয়ে বহমান নুরানী গঙ্গা নদী। এক সময় হাজার হাজার মানুষের জীবিকার উৎস ছিল এই নুরানী গঙ্গা নদী। নদীর পানি সেচ কাজে ব্যবহার করতো কৃষক। বর্ষা হওয়ায় নদীতে পানি হতো জমিতে পলি পড়তো কৃষি জমিতে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পেত। পলি পড়ার কারণে কৃষকের ফলন ভালো। নদীটি খনন করা হলে কৃষি কাজে কৃষকের অগ্রহ তৈরি হবে।’ বলধারা ইউনিযন কৃষি উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বলধারা, সোলাই বাংগালা, জেলে রাজবংশী সম্প্রদায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন এই নদী থেকে। নদীতে নৌকা চলাচল করার কারণে ব্যবসা বাণিজ্যর প্রসার ঘটেছিল। কিন্তু বর্তমান নদীটিতে বছরে মাত্র তিন থেকে চারমাস পানি থাকে। এই নদটি খনন করা করা হলে জেলে সম্প্রদায়ের পেশা টিকে থাকবে সেই সাথে নারীদের গৃহস্থলী কাজে দৈনন্দিন ব্যবহারের পানি সংকট থেকে মুক্তি পাবে।’

happy wheels 2

Comments