মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বৃথা যেতে পারে না
মানিকগঞ্জ থেকে বিমল চন্দ্র রায়
তরুণদের সংগঠন ইযুথ গ্রীণ ক্লাব এবং বারসিক’র যৌথ আয়োজনে গতকাল মানিকগঞ্জ স্যাক কার্যালয়ে যুদ্ধ দিনের গল্প ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা শংকর লাল ঘোষ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও মানিকগঞ্জ শহরে প্রথম প্রবেশকারী তরুণ বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ(অ:) এ্যাডভোকেট আজহার উদ্দিন আরজু যুদ্ধ দিনের গল্প তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘১৪ তারিখ সকালে আমি বাই সাইকেল চালিয়ে খুব ভোরে ঢাকা আরিচা মহাসড়কে দিয়ে পাক বাহিনীর ক্যাম্প পিটিআই এ আসি এবং দেখি পাকবাহিনী ক্যাম্প ছেড়ে চলে গিয়েছে। সেখানে অনেক মানুষের হত্যা ও নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পাই। সাইকেল চালিয়ে শহরে প্রবেশ করি।’ আলোচনায় তিনি দাবি করেন যে মানিকগঞ্জে অনেকগুলো বধ্যভূমি আছে (কূপকোয়া), যেখানে অনেক মানুষকে হত্যা করে ফেলে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো সংরক্ষন করা ও স্মৃতিস্তম্ভ বানানো প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
নিজ উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী লেমুবাড়ি ইউনিয়নের বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘একটি লুঙ্গি ও গামছা সম্বল করে আমাদের এলাকার আগরতলা ষড়যন্ত্রমুলক মামলার আসামি বঙ্গবন্ধুর জেল সহযাত্রী সামসুল হকের নেতৃত্বে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি।’ বীর মুক্তিযোদ্ধা শংকর লাল ঘোষ বলেন, ‘আমি কালিগংগা নদী সাতরিয়ে একজন পাক হানাদারকে ধরতে যাই এবং সকলে মিলে তাকে ধরা হয়। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস মানিকগঞ্জ দক্ষিণাঞ্চলে মুক্তিক্যাম্পে অবস্থান করি।’
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ বলেন, ‘আমি মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিতে বিএনসিসির ড্যামি রাইফেল নিয়ে ট্রেনিং নিই এবং বিভিন্ন ক্যাম্পে থাকি।’ অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজবর রহমান মাষ্টার, জেলা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আশুতোষ রায়, আবৃত্তিকার ও বধ্যভূমি গবেষক শাকিল আহমেদ সনেট, ইয়ুুথ গ্রীন ক্লাবের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান হৃদয়, প্রগতি লেখক সংঘের মানিকগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম।