মানিকগঞ্জে ফার্মাস লার্নিং সেন্টার উদ্বোধন
মানিকগঞ্জ থেকে মো: মাসুদুর রহমান
মানিকগঞ্জে সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের স্বরুপপুর গ্রামের কৃষক কৃষাণীদের উদ্যোগ ও আয়োজনে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ টিপু সুলতান স্বপন এর স্থানীয় জাতের সবজি বীজ বিনিময়ের মধ্য দিয়ে ফার্মাস লার্নিং সেন্টার উদ্বোধন হয়েছে। ৩০টি কৃষক পরিবারের প্রায় অর্ধ শতাধিক কৃষক কৃষাণীগণ তাদের জ্ঞান, দক্ষতা, স্থানীয় জাতের শাকসবজি ও মাঠ ফসলের বীজ সহভাগিতা এবং কৃষি প্রতিবেশ বিজ্ঞান চর্চাসহ স্থানীয় কৃষি প্রযুক্তি হস্তান্তরে এই লার্নিং সেন্টার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
উপজেলার বায়রা ও তালেবপুর ইউনিয়নে ২০২১ সাল থেকে জনগোষ্ঠী পর্যায়ে রাসাযনিক কীটনাশক সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি ও জীব বৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখার জন্য কৃষি প্রতিবেশ বিজ্ঞান চর্চা অব্যাহত আছে। কাজের ধারাবাহিকতায় ফসলের অনিষ্টকারী পোকা দমনে আগ্রহী কৃষক কৃষাণীদের ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি, জৈব বালাই নাশক তৈরি ও ব্যবহার বিষযক প্রশিক্ষণ, বীজ বিনিময়, অভিজ্ঞতা বিনিময় সফর, কীটনাশকের বিষক্রিয়া থেকে শিশুদের রক্ষায় স্কুল পর্যায়ে ক্যাম্পেইন কর্মসূচি অব্যাবহত আছে।
বারসিক এর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায় এর কার্যক্রম অবহিতকরণমূলক আলোচনার মাধ্যমে গ্রাম সভার আলেচনা আরম্ভ হয়।
সভায় উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ টিপু সুলতান স্বপন বলেন, ‘ইকোলোজি একটি সমন্বিত ব্যবস্থাপনা অর্থাৎ এই ব্যবস্থাপনায় কোন প্রাণের ক্ষতি হবে না, প্রত্যেকটি প্রাণি তার নিজস্ব প্রতিবেশে নিজের মত করে বেঁচে থাকবে পাশাপাশি রাসায়নিকের বিষাক্ততা হতে পরিবেশ, মানুষসহ অন্যান্য প্রাণি রক্ষা পাবে। আর এর জন্য ভার্মি কম্পোসাট, ট্রাইকো কম্পোস্ট, খামার জাত সার, সবুজ সার, গর্ত কম্পোস্টসহ সকল জৈব সারের ব্যবহার বাড়াতে হবে।’ তিনি জানান, এই লার্নিং সেন্টারে সিংগাইর উপজেলা কৃষি অফিস, সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন সিরিজ নিয়ে কথা বলবেন এবং এখানে পদ্ধতিগুলোর প্রায়োগিক ব্যবহার হবে।
সিংগাইর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার মোহাম্মদ সরবেশ আলী বলেন, ‘ফসলের জমিতে বিষ দিলে সকল পোকা মারা যায়, আপনারা মনে রাখবেন একটি উপকারী পোকা ১০টি ক্ষতিকর পোকাকে খেয়ে ফেলে, কাজেই আপনাদেরকে পোকা চিনতে হবে, প্রাথমিক অবস্থায় আপনারা হাত দিয়ে ক্ষতিকর পোকার ডিম, কীড়া, পুত্তলি মেরে ক্ষতির মাত্রা সর্ব নি¤œ পর্যায়ে রাখতে পারেন।’ উপসহকারী কৃষি অফিসার কাজী সহিদুল ফেরদৌস বলেন, ‘ঘাস মারার বিষে অনেক উপকারী উদ্ভিদ মারা যাচ্ছে কাজেই কৃষি প্রতিবেশ সুরক্ষায় ঘাস মারার ঔষধ ব্যবহারে আপনাদের সাবধান হতে হবে।’ স্বরুপপুর গ্রামের কৃষাণী নমিতা রানী কীত্তুর্নীয়া বলেন, ‘বর্দো মিক্সার ব্যবহার করে চাল কুমড়ার পচন রোগ নিরাময় হয়েছে। আমি প্রশিক্ষণ নিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করতে চাই।’
উদ্বোধনী লার্নিং সেন্টারের উদ্দেশ্য নিয়ে কথা বলেন, উপ সহকারী কৃষি অফিসার আহসান হাবীব, তাপস অধিকারী, ভবেশ অধিকারী, বাসুদেক বেপারী, হরিপদ সন্ন্যাসী, মো: সেলিম, মিতু প্রমুখ। সর্বশেষে লার্নিং সেন্টারের আহবায়ক দশরথ সন্ন্যাসী সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে গ্রাম সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।