আমরা অধিকার চাই, স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই

মানিকগঞ্জ থেকে শ্যাময়েল হাসদা
‘কাউকে পেছনে ফেলে নয়; আদিবাসী অধিকার প্রতিষ্ঠায় নতুন সামাজিক অঙ্গীকারের আহŸান’- এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বারসিক‘র সহযোগিতায় মানিকগঞ্জ হিউম্যান রাইটস ও দলিত ছাত্র কল্যাণ পরিষদ উদ্যোগে গতকাল আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে অনলাইনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিবসটির উদযাপনের মূল লক্ষ্য হলো: আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জীবনধারা, মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার ও তাদের ভাষা ও সংস্কৃতি তথা আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন করা।
মানিকগঞ্জ হিউম্যান রাইটস’র সভাপতি এ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষের সভাপতিত্বে এবং বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায়ের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সমতল অঞ্চলের আদিবাসী নেতা নরেশ ওরাঁও। তিনি সমতল আদিবাসীদের বর্তমান চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘আজ আমারা স্বাধীনতা দিবসের ৫০ বছর পরও নিজের অধিকার পেলাম না। আমাদের নিজ ভিটেমাটি থেকে উৎচ্ছেদ করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে, আমাদের মা বোনদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধেও আদিবাসীদের ভূমিকাও কম ছিল না। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজও আমরা আমাদের অধিকার ও স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত।’ পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসী নেতা অনন্ত ধামাই পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসীর সমস্যার কথা বলেন। তিনি সকল আদিবাসীদের অধিকারের কথা তুলে ধরেন।


এ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ বলেন, ‘শুধুমাত্র আলোচনায় নয় সুনির্দিষ্ট পন্থায় অধিকার আদায়ে আমাদের অগ্রসর হতে হবে। আদিবাসীদের নিজস্ব যোগ্যতায় ক্ষমতায়নের মাধ্যমে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হয়ে নিজেদের অধিকার আদায়ে কাজ করতে হবে।’ সংসদে আদিবাসীদের প্রতিনিধি যুক্ত করার আহ্বান জানান।

রাজশাহী সমতল আদিবাসী শ্যাময়েল হাসদা বলেন, ‘আমরা অনেক অবহেলিত, আমাদের জমি দখল করে নেওয়া হচ্ছে, ঘরবাড়ি জালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা যদি দেশের নাগরিক হয়ে থাকি তাহলে কেন আমরা আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবো। জাতিসংঘ আমাদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্র আমাদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।’ তিনি আদিবাসী সুশীল সমাজের লোকজন ও শিক্ষিত যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান ও নিজ অধিকারে জন্য আন্দোলনের আহ্বান জানান।


সুনামগঞ্জ থেকে আদিবাসী এন্ড্রু সলেমার বলেন, ‘আদিবাসীরা অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। আদিবাসীদের স্বীকৃতি দেয়ার পাশাপাশি তাদের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে।
আলোচনায় আরো বক্তব্য রাখেন উন্নয়ন কর্মী আব্দুল ওয়াহেদ, সমাজকর্মী ইকবাল খান, পাস্টর এ্যাডওয়ার্ড জামান, উন্নয়ন কর্মী নজরুল ইসলাম, মমতাজ আরা বেগম, রাশেদা আক্তার, মুক্তার হোসেন, সত্যরঞ্জন সাহা, কমল চন্দ্র দত্ত, শাহীনুর রহমান, মীর নাদিম প্রমূখ।

happy wheels 2

Comments