সাম্প্রতিক পোস্ট

পাখি ও পরিবেশবান্ধব বৃক্ষরোপণ

মানিকগঞ্জ থেকে রাশেদা আক্তার

“দেশের বায়ু, দেশের মাটি, গাছ লাগিয়ে করবো খাটি” শ্লোগানকে সামনে রেখে গত ১৯ জুলাই মানিকগঞ্জ জেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চরমত্ত ও বাসুদেবপুর গ্রামে চরমত্ত গ্রামের প্রত্যয় কিশোরী সংগঠন ও যুবদের যৌথ আয়োজনে এবং বারসিক ও পালক (পাখি লালন করি) সংগঠনের যৌথ সহযোগিতায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে বারসিক কর্মী, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি, স্থানীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, যুব, কিশোরী, নারী- পুরুষ, স্কুলের শিক্ষার্থীসহ প্রায় দুই শতাধিক লোক উপস্থিত ছিল।

37278131_1268881029909220_5920932749081837568_n

কর্মসূচির শুরুতেই বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বারসিক এর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায়। তিনি বলেন, “গাছ আমাদের পরিবেশের জন্য খুবই জরুরি। গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয়। গাছে অনেক পাখি বাসা বাঁধে। গাছ, পাখি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। আমরা অনেক গাছ লাগাই নিজের কথা ভেবে কিন্তু পাখির কথা কেউ চিন্তা করে গাছ লাগাই না। গাছ শুধু লাগালেই হবে না তার যত্ন নিতে হবে। আমরা যেভাবে সন্তানের যত্ন নেই ঠিক সেভাবেই গাছের যত্ন নিতে হবে।”

37282191_1444750228959642_8716187831430545408_n

পালকের যুগ্ম আহবায়ক খন্দকার খালেকুজ্জামান বলেন, “একজন মানুষের প্রতিদিন ৭০০ টাকার অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। গাছ যদি অক্সিজেন না দিত তাহলে আমাদের প্রতিদিন এই ৭০০ টাকার অক্সিজেন কিনতে হতো। গাছের কারণেই আমাদের এই টাকা লাগে না। কিন্তু আমরা তা বুঝিনা। আমরা গাছ লাগাতে চাই না। গাছের যত্ন করি না। গাছ ফল দেয়, কাঠ দেয়। গাছের গুরুত্ব বলে শেষ করা যাবে না। আপনারা এখানে যারা আসছেন তারা গাছ লাগাবেন এবং গাছের যত্ন নিবেন নিজের সন্তানের মত করে।” পালকের আহবায়ক জাহিদুল ইসলাম রোম বলেন, “আমরা পাখি নিয়ে কাজ করি। পাখি যাতে নিরাপদ থাকে, কেউ যাতে পাখি শিকার করতে না পারে তা নিয়ে কাজ করি। পরিবেশ ও পাখিবান্ধব গাছ রোপণ করি। আপনারা যারা গাছ লাগান তার যত্ন নিবেন। পাখির খাবার উপযোগি গাছ লাগাবেন।”

37293289_1444749065626425_7146049948105048064_n (1)

স্যাক এর সভাপতি এ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ বলেন, “গাছ বিভিন্ন ভাবে আমাদের কাজে লাগে। এক. গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয়। ২. গাছ থেকে আমরা বিভিন্ন রকম ফল পাই যা খেলে আমাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ৩. গাছ বিক্রি করে আমরা টাকা পাই। কাজেই গাছ লাগালে তা বৃথা যায় না। যে এলাকায় বড় বড় তাল গাছ আছে সে এলাকায় বজ্রপাত কম হয় এবং বজ্রপাত হলেও মানুষ মারা যায় কম। কারণ বড় বড় গাছ বজ্রপাত শোষণ করে নেয়। আজকাল শহরে পাখিই দেখা যায়। কারণ পাখির উপযোগি গাছ নাই। পাখি বাসা বাঁধতে পারে না। পাখির খাবার নেই। গ্রাম অঞ্চলে পাখি ফসলের ক্ষতিকর পোকা খেয়ে ফেলে ফসলকে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। তাই আপনারা বেশি বেশি পরিবেশবান্ধব গাছ লাগান। নিজে ভালো থাকুন, পরিবেশ ভালো রাখুন।”

37325975_1268881073242549_9157599788152127488_n

স্থানীয় যুব প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম বলেন, “আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই গাছ লাগাতে হবে ও গাছের যতœ নিতে হবে। আজ আমার ডাকে সাড়া দিয়ে আপনার এখানে এসছেন এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা সবাই গাছ লাগাবো এবং গাছের পরিচর্যা করবো।”

আলোচনা শেষে মুক্তিযোদ্ধা উচ্চ বিদ্যালয় ও বাসুদেবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে কৃষ্ণচ’ড়া গাছ রোপন করা হয়। সেই সাথে কিশোরী, যুব, নারী-পুরুষসহ ১৫০ জনের মাঝে ৬০০টি ফলজ, বনজ ও ঔষধী গাছ বিতরণ করা হয়।

happy wheels 2

Comments