নেত্রকোণায় জনসংগঠনের আয়োজনে একুশের চেতনাকে ধারণ
নেত্রকোনা থেকে এস,এম হারুন, জে কে রাজন ও ইউসুফ
আমাদের চারদিকে বিদেশী সংস্কৃতির র্চচার উদ্দীপনায়, চোখ ধাধাঁনো চাকচিক্যে, দ্রুততর জীবনযাপনের অভ্যস্ততায় আমরা হারিয়ে ফেলছি আমাদের অস্তিত্বকে। বিকৃত হচ্ছে আমাদের ইতিহাস। যুব সমাজ তাদের নিজেদের যুক্ত করছে অন্য বিক্ষিপ্ত পথে। চারদিকে অসঙ্গতির ঘটনা আমাদের ভাবিয়ে তুলে কোথায় দাঁড়িয়ে আছি, আর কোথায় গিয়ে দাঁড়াব আমরা? এতো অসঙ্গতি থেকে কিভাবে আমদের মুক্তি হবে? তারপরও সকল সংকটে আমাদের আছে চেতনার একুশ।
একুশের চেতনায় উদ্ভাসিত নেত্রকোণা জেলার সদরউপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দা গ্রামের রক্তের বন্ধন যুব সংগঠনের সদস্যরা, চল্লিশা আইপিএম ক্লাব, অগ্রযাত্রা কিশোরী সংগঠন ও বারসিক মহান শহীদ দিবস প্রভাত ফেরী, চিত্রাংকন, একুশের গান, বর্ণমালা প্রদর্শনী, পুষ্পস্তবক অর্পন, কবিতা আবৃত্তি, আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে।
একুশ আমার চেতনা, একুশ আমার গর্ব, একুশ আমার মুক্তির আলোকবর্তিকা। আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি। ভাষা শহীদদের স্মরণে একুশের চেতনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নেত্রকোনা জেলার সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের আব্বাসিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে রক্তের বন্ধন যুব সংগঠনের তরুণরা একুশে ফেব্রুয়ারীর অনুষ্ঠান আয়োজন করে। সাতবুড়িকান্দা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে। ‘আমি জন্মেছি বাংলায়, আমি বাংলায় কথা বলি। আমি তো এসেছি কৈবর্তের বিদ্রোহী গ্রাম থেকে।’ কবি সৈয়দ সামছুল হকের ‘পরিচয়’ কবিতা থেকে গর্বের সাথে আবৃতি করছিল আব্বাসিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিয়াদ সাইফুল্লাহ। পরবর্তীতে একে একে তারা একুশের কবিতা, রচনা-একুশের ইতিহাস, একুশের গান, অভিনয়ের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানকে আন্দময় করে তোলে। চল্লিশা ইউনিয়নের কৃষক আইপিএম ক্লাব ও চল্লিশা গ্রামের কৃষক মিলে স্থানীয় শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।
এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এলাকার মানুষজনের মধ্যে একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনা জাগ্রত হয়। এলাকার মানুষ উৎসাহের সাথে একুশে ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠানকে বরণ করে নেয়। মনের ভাব প্রকাশ করার অন্যতম মাধ্যম ভাষা, মাতৃভাষায় মানুষ তার আবেগ অনুভূতি প্রকাশ করে। তাই এই ভাষাকে জানতে হবে, জানতে হবে ভাষার সঠিক ইতিহাস ও ব্যবহার।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠান শেষে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। ছোট বাচ্চারা একুশ সম্পর্কে, একুশের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পেরেছে, যা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাংলা ভাষার মূল্যায়নে তরান্বিত করে। কারণ আজকের প্রজন্ম আগামীর ভবিষ্যৎ।