স্থানীয় জাতের মাছ দিন দিন কমে যাচ্ছে
হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে মুকতার হোসেন
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন চারদিকে পদ্মা নদীর দ্বারা বেষ্টিত। পদ্মা নদীর কোল ঘেঁষে রয়েছে অনেক খাল বিল, কোল, মাইটাল, জলাশয়, সামাজিক প্রাকৃতিক পুকুর, ডোবা ইত্যাদি। এ সব জলাশয়ে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্র্যময় স্থানীয় জাতের মাছ।
এসব জলাশয়, ডোবা ও বিলে মানুষ বিভিন্ন সময়ে মাছ ধরেন। এই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি পাটগ্রামচর পদ্মার নদীর কোলে আনন্দঘন পরিবেশে উৎসবের মধ্যে দিয়ে পলো বাছে মাছ ধরতে আসে বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। পলোবাইছে মাছ ধরতে আসা পাটগ্রামচর বাড়ি মৎস্যজীবী সুজন মিয়া বলেন, ‘খাল বিলে স্থানীয় জাতের মাছ বেশি পাওয়া যায়। খাল বিল যত কমে যাবে তত স্থানীয় জাতের মাছের সংকট দেখা যাবে। চাষকৃত মাছের উপর মানুষ নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। সকল পরিবারের পক্ষে মাছ কিনে খাওয়া সম্ভব হবে না।’
অন্যদিকে হালুয়াঘাটা গ্রামের মাছ মারতে রুবেল হোসেন বলেন, ‘আমাদের চরাঞ্চলে এ সকল উমুক্ত খাল বিলে ধনী ও গরিব নাই। নারী ও পুরুষ সবাই এক সাথে আনন্দদের সাথে মাছ মারছে। কেউ কম পেয়েছে আবার কেই বেশি পেয়েছে তাতে মনে তাদের বিন্দুমাত্র কষ্ট নাই।’
চরাঞ্চলে খাল বিল ডোবায় রয়েছে নানান প্রজাতির স্থানীয় জাতের মাছ তার মধ্যে বোয়াল, টাকি, টেংরা, মোয়া, গুতুম, রয়না, পুটি, বাইং, ষোল, বাতাসি, নওলা, ইচা,বাইলা ও গোইনা। সবার হাতে হাতে ছিল মাছ ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম যা নিজেদের তৈরি করা। পলো, উচাজাল, খেওজাল, তুইরাজার, ছিপজাল, দউজাল, চাক, হোসেজাল, দোয়ারী।
মাছ ধরতে আসা খরিয়া গ্রামে কৃষক মোস্তফা মিয়া বলেন, ‘স্থানীয় জাতের অনেক দিন দিন কমে যাচ্ছে। অনেক উন্মুক্ত জলাশয় প্রভাবশালীরা নিজেরা মাছ চাষের আওতায় নিয়ে গেছেন। যেখানে গ্রামের সকল মানুষ উমুক্তভাবে মাছ ধরতে পারেন না। তাছাড়াও কারেন্টজাল, পোনামাছ ধরা, সেচ দিয়ে মাছ মারা, পানিতে বিষ দিয়ে মাছ ধরার কারণে মাছের জাত বৈচিত্র্য কমে যাচ্ছে। স্থানীয় জাতের মাছ টিকে রাখতে আমাদের সবার সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।’
বারসিক এলাকায় স্থানীয় মাছ বৈচিত্র্য বৃদ্ধিতে মৎস্যজীবী, কৃষক-কৃষাণী, পেশাভিত্তিক মানুষের সাথে সচেতনমূলক আলোচনা সভা এবং স্থানীয় খাল বিল, ডোবা, প্রাকৃতিক জলাশয় রক্ষায় মতবিনিময় করে যাচ্ছে।