গরু পালনে স্বপ্ন পূরণ করতে চান চন্দনা রানী
সাতক্ষীরা থেকে ফাতিমা আক্তার
বাংলাদেশের উপকুলবর্তী সর্ববৃহৎ উপজেলা শ্যামনগর উপজেলা। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দূর্যোগের সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হয় এই উপকূলীয় এলাকার মানুষের। বিশেষ করে নারীদের জীবনে সংগ্রাম করতে হয় বেশির ভাগ সময় ধরেই। তেমনই সংগ্রামী একজন নারী চন্দনা রানী।
শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের, বুড়িগোয়ালিনী গ্রামে বাস করেন চন্দনা রানী (৩৫)। স্বামী দুই মেয়ে ও শশুর শাশুরি নিয়ে ৬ জনের সংসার তাঁর। চন্দনা রানীর স্বামী সুব্রত মন্ডল একজন দিনমজুর। পাশাপাশি তিনি নদীতে জাল টেনে মাছ ধরেন। তবে তাঁর স্বামী অসুস্থ্যতার জন্য ভালো একটা আয় করতে পারে না। তাই,চন্দনা রানীকেও দিনমজুরির পাশাপাশি নদীতে মাছ ধরে স্বামী সাহায্য করতে হয়। ৬ জনের সংসার চালাতে গিয়ে যেন চন্দনা রানীর যেন হিমশিম খেতে হয়,সংসার পরিচালনা করতে। এছাড়া মেয়ে দুটোর পড়াশোনা ও অসুস্থ শ্বাশুরীর চিকিৎসা খরচ তো রয়েছেই।, সব মিলেই যেন এক সংগ্রামী জীবন চন্দনা রানীর। তাঁর অবস্থা যেন নুন আনতে পানতা ফুরায় এর মতো। কখনো ভালো কিছু জোটেনি চন্দনা রানীর এই জীবনে!
এভাবে চলতে চলতে তিনি ২০২২ এর অক্টোবর মাসের শেষের দিকে বারসিক পরিবেশ প্রকল্পের সাথে যুক্ত হন। দায়িত্ব ও স্বচ্ছতা দেখে দলীয় সভায় সকলেই সিদ্ধান্ত নিয়ে চন্দনা রানীকে উক্ত দলের সভানেত্রী নির্বাচিত করা হয়। বারসিক পরিবেশ প্রকল্প থেকে তাঁকে একটি গরু কিনে দেওয়া হয়। প্রকল্পের টাকা আর চন্দনা রানী মায়ের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে গরুটি কেনা হয়। গরুটি বাচ্ছা দিয়েছে ৬মাস আগে। চন্দনা রানী এখন দুটি গরুর মালিক। কিছুদিনের মধ্যে গরুটি আরো ১টি বাচ্চা দেবে বলে তিনি জানান। গরু ২টির বর্তমান মূল্য আনুমানিক ৮০ হাজার টাকা।
গরু পালন করে চন্দনা রানী সফল। গরুগুলো তাঁর সংসারে অনেক স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করবে বলে তিনি জানান। গরুগুলো এখন তাঁর পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করছে। এছাড়া দুধ বিক্রির টাকা দিয়ে মেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছেন তিনি। অন্যদিকে গরুর গোবর দিয়ে বড় একটি জ্বালানির চাহিদা মিটছে তাঁর। এ গোবর বিক্রি করেও তিনি আয় করছেন। চন্দনা রানীর জীবন এখন আগের তুলনায় বেশ ভালো। তিনি আশা করছেন অদূর ভবিষ্যতে তাঁর জীবন ও জীবিকা আরও ভালো হবে। তিনি এখন হতাশ নন। এখন কিছুটা দুর হইছে, তিনি মহাখুশি।
চন্দনা রানী স্বপ্ন দেখা শুরু করছেন যে, গরু বিক্রির টাকা দিয়ে প্রথমে তিনি সুন্দর একটা ঘর তৈরি করবেন এবং মেয়ে দুটোর ভালো করে পড়ালেখা করাবেন। তাঁর স্বপ্নের সাথে অংশীদার হওয়ার জন্য বারসিক পরিবেশ প্রকল্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।